বছরে মাত্র তো চারটে দিন, তার জন্য কত অপেক্ষা। উৎসবের ওই ক'টা দিন সাজগোজ না করলে হয় বলুন? অতিমারীতে তে বাকি সব উদযাপনের ফুরসতও কমেছে। ঘোরা বন্ধ, নেমন্তন্নও পাননা। সাজার একটা বাহানা তো চাইই। সবেধন নীলমণি পুজোই তো আছে কেবল নিজেকে সাজানোর জন্য।
সপ্তমী থেকে দশমী কী পরবেন, কিছু ভেবেছেন? পুজোর দিনগুলোয় একটু ট্র্যাডিশনাল ওয়্যার মানে, শাড়ি কিম্বা সালোয়ারের আশেপাশে ঘোরা ফেরা করলেই ভালো। জিন্স টপ, কুর্তি পরার বাহানা রোজ আসে। কিন্তু শাড়ি তেমন পরা হয়না বেশির ভাগেরই। তার ওপর ওয়র্ক ফ্রম হোম আসার পর থেকে শাড়ির ভাঁজও তো খোলা হয়নি বোধ হয়।
এখন কিন্তু খুব জমকালো শাড়ির চল নেই। বরং সুতির এক রঙা শাড়ি, সঙ্গে হালকা পাড়, কন্ট্রাস্ট ব্লাউজ এখন ইন। একই সঙ্গে ট্র্যাডিশনাল আর ফর্মাল লুকের মিশেল। ট্রাই করেই দেখুন না।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাল রেখে ফ্যাশন বদলেছে চিরকাল। এখন ট্রেন্ড, গর্জাস ব্লাউজ, সঙ্গে ছিমছাম শাড়ি। ব্লাউজের ব্যাকসাইডে নানা ছবির চল। হতে পারে, সিনেমার পোস্টার, কিমবা দুর্গার মুখ, অথবা ফুলের ছবি বা অন্য কিছু। একই সঙ্গে শাড়ি আর ব্লাউজ দুটোই জমকালো হলেই কিন্তু মাঠে মারা যাবে সব। পুজোর শপিং করার সময় বরং ব্লাউজের বাজেট বেশি রাখুন। শাড়ি থাকুক সাদা মাটা। কথায় বলে ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। আর পাঁচজন পরছে বলে আপনাকে পরতেই হবে, এমনটা যেন না হয়। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ক্যারি করলেই পরুন। আপনার হয়ে কথা বলবে কিন্তু আপনার পোশাক, আপনার হাঁটা চলা, আপনার সহজ ধরন। পোশাক নিয়ে নিজে অস্বস্তিতে থাকলে চাপে পরে কিনবেন না। তাতে ফ্যাশন থেকে দূরে থাকতে হয় হোক।
শাড়ি পরারও নানা চল এসেছে আজকাল। এক ভাবেই পরতে হবে তার কোনও মানে নেই। তবে চারটে দিনের মধ্যে অন্তত একটা দিন একটু ট্র্যাডিশনাল সাজ রাখার চেষ্টা করুন। খোলা চুল, চোখে কাজল, কপালে একটা ছোট্ট টিপ। সবই তো হারিয়ে যাচ্ছে, কখনো কখনো পুরনোকে আঁকড়ে ধরা ভালো।
রোজ শাড়িতে একঘেয়ে লাগলে ইন্দো ওয়েস্টার্ন কিছু পরতে পারেন। পুজোর সময়টা শরত হলেও আকাশের মন খারাপ হতেও পারে। তাই খুব ভারি মেক আপ করলে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। আর একটা কথা মনে রাখবেন। লেস ইজ মোর। সাজ অল্প হলে বেশি সুন্দর দেখায় আপনাকে। সাজ বেশি হলে আপনাকে চোখে পড়ে না। চোখ পড়ে পোশাকে, সরঞ্জামে।
যাই পরুন, ভালোবেসে পরুন। আয়নার চেয়েও বেশি বিশ্বাস করুন নিজেকে।
সব পরামর্শ দুর্গাদের দিলাম বলে কার্তিক ঠাকুররা রাগ করলেন বুঝি। দেবী পক্ষ তো, সাজগোজ করুন, তবে আপনার ঘরের অথবা মনের দেবীটির খেয়াল রাখুন, যত্ন করুন একটু। পুজো ভালো কাটুক সব্বার।