সোনালি জড়ির কাজ করা একচালা প্রতিমা। বেরিয়ে যাচ্ছে শোভাবাজার রাজবাড়ির দালান থেকে, বাড়ির সদস্যদের কাঁধে চেপে। যে ঘোর বিশ্বাস থেকে দুর্গা কে ঘরের মেয়ে ভাবা, তা ফুরিয়েছে দশমীর সকালের ঘট বিসর্জনের পরই। প্রতিমা এবার বিসর্জনের পথে। নিষ্প্রাণ মাটির ডেলা দিয়ে বানানো পুতুলই এখন, তবে তাঁর যাওয়ার বেলায় কেন কেঁদে উঠছে মন?
হুড়োহুড়িতে প্রতিমা সামান্য দুলে গেলেও কী যে ব্যাকুল হয়ে ওঠা, মনের মধ্যে এই যে বিসর্জনের বোধ, এ তো বাঙালির চিরন্তন। দশমীর সকাল বিষাদের, রাজবাড়িতেও, কুঁড়েঘরেও। দিনভরের এই বিষণ্ণতা, এই বুক হু হু করা শুন্যতা, মিলিয়ে দেয় চূড়ান্ত বৈভব, এবং দৈন্যকেও।
১৭৫৭ সালে রাজা নবকৃষ্ণ দেব শোভাবাজার রাজবাড়িতে প্রথম দুর্গা পুজোর আয়োজন করলেন। পলাশির যুদ্ধে সিরাজদৌল্লার বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়ে ব্রিটিশদের সাহায্য করেছিলেন রাজা নবকৃষ্ণ দেব। যুদ্ধে রবার্ট ক্লাইভের জয় উদযাপন করতে নবকৃষ্ণ দেবের বাড়িতে বসল দুর্গাপুজোর আসর। এ বছর ছিল পুজোর ২৬৭ বছর।