দুর্গাপুজো শেষ হতে না হতেই বাড়িতে বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় । টলি অভিনেত্রী অপরাজিত্য আঢ্যর বাড়িতে ধূমধাম করে লক্ষ্মীপুজো হয় । বিয়ের পর থেকে পুজোর সব আয়োজন করেন অভিনেত্রী নিজেই । এতগুলো বছরেও লক্ষ্মীপুজোর আয়োজনে কোনও অন্যথা ঘটেনি । তবে, এবার উৎসবে মন নেই অপরাজিতার । দুর্গাপুজোয় সিঁদুর খেলেননি । ধুনুচি নাচ, পুজোর হই-হুল্লোড় থেকে নিজেকে বিরত রেখেছিলেন । লক্ষ্মীপুজোও এবার ধূমধাম করে পালন করবেন না বলে জানিয়ে দিলেন অপরাজিতা আঢ্য । পুজো হবে, তবে সাদামাটাভাবে । কোনও এলাহি আয়োজন করা হবে না ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় খোলা চিঠি লিখেছেন টলি অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য । সেখানে তিনি লিখেছেন, এ বছর উদযাপন থাকছে না । তাঁর কথায়, 'যে সময়ে রক্ত মাংসের লক্ষ্মীদের এত অবমাননা প্রতিনিয়ত, সেই সময়ে উপাসনা থাকলেও লক্ষ্মী দেবীর পুজো উদযাপন খানিকটা নিরর্থক'। প্রতি বছর লক্ষ্মীপুজোর দিন দেবীকে নিজের হাতে সাজান অপরাজিতা । বাড়ির ঠিক লক্ষ্মী বউয়ের মতো নিজেকেও সাবেকি সাজে সাজিয়ে তোলেন অভিনেত্রী । নিজের হাতে ভোগ রাঁধেন । পাতপেড়ে খাওয়ারও ব্যবস্থা থাকে অভিনেত্রীর বাড়িতে । তবে, এবার আর সেভাবে উদযাপন হচ্ছে না । শুধুমাত্র নিয়ম মেনে পুজোটাই করবেন । বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অভিনেত্রী ।
সোশ্য়াল মিডিয়ায় অপরাজিতা লেখেন, "কোজাগরি লক্ষ্মী পুজোর ফটফটে পূর্ণিমা রাতে লক্ষ্মী দেবী মর্ত্যলোকে অবতরণ করে ঘরে ঘরে যান । জিজ্ঞেস করেন, 'কে জাগো? 'যে জেগে থাকে তার ঘর বৈভবে পূর্ণ করে চলে যান লক্ষ্মী দেবী । এই বৈভব প্রকৃত অর্থেই যে মননের বৈভব, আর এই জাগরণ যে চেতনার নবজাগরণ তা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না । কিন্তু এমন এক সময়ের সম্মুখীন আমরা যখন আমাদের ঘরের লক্ষ্মীরা দেবীপক্ষের অনেক আগে থেকেই আত্মপক্ষের লড়াই বুকে বেঁধেছে, প্রতি রাতে রাজপথে রাজপথে প্রশ্ন চিহ্ন রেখেছে, “কার চেতনা জাগ্রত? কে আছো এই নবজাগরণের লড়াই মাথায় ধারণ করবে?"
অভিনেত্রী আরও লেখেন, "সকলেই জানেন,কোজাগরি পুজোর এই বিশেষ দিনে আমি, অপরাজিতা, বিশেষ উদযাপনের ব্যবস্থা করি প্রতি বছরে । কিন্তু এই বছরটা উদযাপন থাকছে না । যে সময়ে রক্ত মাংসের লক্ষ্মীদের এত অবমাননা প্রতিনিয়ত, সেই সময়ে উপাসনা থাকলেও লক্ষ্মী দেবীর পুজো উদযাপন খানিকটা নিরর্থক মনে হয় । তাই, অনেক ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিলাম ।"
দুর্গাপুজোর আগেই অপরাজিতা জানিয়েছিলেন, বিজয়ার আগে আরজি কর-কাণ্ডে সুবিচার না পেলে মা দুর্গাকে বরণ করবেন না । সিঁদুর খেলবেন না । বিজয়া দশমীতে তাই কোনও আড়ম্বর ছিল না । শুধু নিয়ম মেনে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়েছে ।