সদ্য প্রয়াত অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার লড়াই ইতিমধ্যে বাংলার কাছে, বাঙালির কাছে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দীর্ঘ সাত বছরে দুবার ক্যানসারের মতো মারণ ব্যাধির সঙ্গে হাসি মুখে লড়াই করেছেন ঐন্দ্রিলা। অভিনেত্রীর মৃত্যুর পর সেই লড়াইয়ের কথা আরও একবার তুলে ধরলেন চিকিৎসক সুমন মল্লিক।
ঐন্দ্রিলাকে বিগত সাত বছর ধরে অন্য অনেকের চেয়েই বেশি কাছ থেকে দেখেছেন কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ সুমন মল্লিক। অবশ্যই অভিনেত্রীর চিকিৎসার সুবাদে। ঐন্দ্রিলার চিকিৎসাকাল চিকিৎসকদের কাছেও এক অভিজ্ঞতা। সেই নিয়েই আনন্দবাজারে কলম ধরেছেন স্বয়ং চিকিৎসক। লিখেছেন, ক্যানসার হলে অনেকেই তা লুকোতে চায়, ঐন্দ্রিলা কোনওদিন সেই পথে হাঁটেননি, কেমোথেরাপির পর পরচুলা পরেননি, চুল উঠে যাওয়া চেহারা নিয়েই জনসমক্ষে আসতে ঐন্দ্রিলার আত্মবিশ্বাস টলেনি।
Aindrila Sharma video: ঐন্দ্রিলার জন্মদিনে গালে কেক মাখিয়ে খুনসুটি দিদির, ভিডিও-ই সম্বল পরিবারের
স্কুলজীবনে ক্যানসারের সঙ্গে প্রথমবার লড়াই, মনোবল তো ভাঙেইনি, বরং স্বপ্ন, জেদ জিইয়ে রেখে অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছে পূরণ করেছিলেন ঐন্দ্রিলা। দ্বিতীয়বারের লড়াইয়ের সময় অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতি হয়েছে। সে সময়ে অপারেশনে জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও ঝুঁকি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে দুবার ভাবতে হয়নি তাঁকে।
রোগমুক্তির জন্য 'পজিটিভ' ভাবনার প্রয়োজন, এটা বিশ্বাস করেন চিকিৎসকেরাও, আর সেখানেই অনেকটা এগিয়ে ছিলেন ঐন্দ্রিলা। তাই বারবার নিভতে নিভতে জ্বলে উঠছিলেন। শেষবারের লড়াইয়েও হার মানেননি শুরুতে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হল কতবার, বায়োপ্সি রিপোর্ট বলছিল, ফের শরীরে ক্যানসার কোষ বাড়ছে। ২০ দিন ধরে অমানসিক লড়াই চালিয়েছে তার পরেও। জ্ঞান ফিরেছিল ২০ দিনের মাঝেও, মুখে পাইপ থাকায় কথা বলতে পারেননি। কিন্তু শুধু ইচ্ছেশক্তির ওপর ভর করে চিকিৎসায় সাড়া দিয়েছেন অনেকটা। প্রায় অসম্ভবকে সম্ভবও তো করে ফেলেছিলেন কখনও কখনও।
ঐন্দ্রিলার অভাব বিনোদন দুনিয়ায় ঠিক যতটা অপূরণীয়, ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দুনিয়াতেও।