ভারতের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুরকার হিসেবে গণ্য করা হয় তাঁকে। সঙ্গীত দুনিয়ার 'জীবন্ত কিংবদন্তি' থেকে শুরু করে 'এশিয়ার মোজার্ট'- আল্লারাখা রহমানকে ঘিরে উপাধিরও শেষ নেই কোনও! পেয়েছেন দেশ-বিদেশের অজস্র পুরস্কার। গ্র্যামি থেকে অস্কার- সব পুরস্কারই রয়েছে তাঁর ঝুলিতে! কিন্তু, জানেন কি, পদ্মভূষণপ্রাপক সুরকার-গায়ক এ আর রহমানের মোট সম্পত্তির পরিমাণ কত? সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এই বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য উঠে আসছে। ডিএনএ জানাচ্ছে, এই সুরকারের আনুমানিক সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১,৭২৮ কোটি টাকা! টাইমস অব ইন্ডিয়া সূত্রে প্রাপ্য তথ্যের ভিত্তিতে আবার জানা যাচ্ছে, মোট সম্পদের পরিমাণ ১,৭২৮ কোটি টাকা থেকে ২,০০০ কোটি টাকার মধ্যে! ইনশর্টস অ্যাপ আবার বলছে, মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১,৭৪০ কোটি টাকার বেশি! স্টার্টআপস মিডিয়ার একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে বলা হয়েছে যে রহমান সবচেয়ে ধনী সঙ্গীতশিল্পী।
দেশের অন্যতম ধনী গায়ক হওয়ার পাশাপাশি, ভারতের সর্বোচ্চ উপার্জন করা গায়কের নামও এ আর রহমান। দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুসারে এ আর রহমান কোনও সিনেমায় একটি গানের জন্য ৩ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নেন। যা দেশের অন্যান্য গায়ক-গায়িকাদের তুলনায় ১২-১৫ গুণ বেশি! এমনটাও শোনা যায় অনেক সময় নাকি গান পিছু পাঁচ কোটি টাকাও দাবি করেন তিনি! প্রতিটি ছবির গান কম্পোজ করতে নেন ১০ কোটি টাকা!
এ আর রহমান ও সায়রা বানুর ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই নেটিজেনদের মধ্যে জোর চর্চা, সুরকারের এই বিপুল সম্পত্তি থেকে ঠিক কত টাকা খোরপোষ হিসেবে পাবেন সায়রা বানু? অঙ্কটা এখনও জানা যায়নি। এ আর রহমানের সম্পত্তির তালিকায় রয়েছে চেন্নাইয়ের বিলাসবহুল বাংলো থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসের বিশাল অ্যাপার্টমেন্টও। এই দু'জায়গাতেই আবার রয়েছে মিউজিক স্টুডিয়ো! এর সঙ্গেই রয়েছে জাগুয়ার, মার্সিডিজ, ভলভো এসইউভি সহ একাধিক চোখধাঁধানো বিলাসবহুল গাড়িও!
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালে সায়রা বানুর সঙ্গে বিয়ে হয় এআর রহমানের। ততদিনে সুরকার হিসেবে দেশজোড়া নাম তাঁর মাত্র দু’মাসের আলাপে বিয়ে। একেবারে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয় তাঁদের। তার পর প্রায় ২৯ বছরের সংসার। তিন সন্তানের বাবা-মা। অবশেষে সেই দাম্পত্যে ইতি টানলেন তাঁরা। শেষ বার তাঁদের একসঙ্গে দেখা যায় অম্বানিদের বাড়ির বিয়েতে। তার মাস কয়েকের মধ্যেই প্রকাশ্যে এল তাঁদের এই বিচ্ছেদের খবর।
বুধবার রাত ১২টার পর এই বিচ্ছেদ নিয়ে বিবৃতি দেন রহমান স্বয়ং। টুইটারে তিনি লেখেন, "আমরা ত্রিশের উৎসব (গ্র্যান্ড থার্টি) একসঙ্গে উদযাপনের কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু, সবকিছুরই একটা শেষ থাকে। তাছাড়া, সব আশাও পূরণ হয় না। হৃদয়ের বিদীর্ণতার ভারে কেঁপে উঠতে পারে ঈশ্বরের সিংহাসনও। তবুও, এই ছিন্নভিন্নতার মাঝেও, আমরা বারবার অর্থ খুঁজে বেড়াই। এ কথা জেনেই যে, ভেঙে যাওয়া টুকরোগুলো আর নিজেদের জোড়া লাগাতে পারবে না কখনও।" বন্ধু এবং শুভানুধ্যায়ীদের কাছে তাঁদের এই সিদ্ধান্তকে সম্মান করার অনুরোধ জানিয়ে কিছুটা প্রাইভেসিও চেয়ে নিয়েছেন রহমান।
ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, নানা মানসিক চাপান-উতোর পেরিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। ছেদ পড়েছে দীর্ঘ ২৯ বছরের দাম্পত্য-জীবনে। প্রেম অগাধ থাকলেও, দুজনের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে। সম্পর্কের গভীরতা এতটাই তলানিতে পৌঁছে গিয়েছিল যে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায়ও ছিল না এ আর রহমান ও সায়রা বানুর। শিল্পীর পোস্টে সেই বেদনার সুর চোখ এড়ায়নি নেটিজেনদের।