সদ্য শতবর্ষ পেরনো সত্যজিৎ রায়ের প্রথম ছবি পথের পাঁচালি তৈরি নিয়েই একটা আস্ত সিনেমা বানিয়ে ফেলেছেন পরিচালক অনীক দত্ত (Anik Dutta)। মুক্তির অপেক্ষায় 'অপরাজিত' (Aparajito)। ইতিমধ্যে নানা কারণে আলোচনায় রয়েছে ছবিটি। বাঙালির অন্যতম আইকনিক চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেতা জিতু কমলকে (Jeetu Kamal)। ছবি মুক্তির ঠিক আগে অভিনেতার সঙ্গে আড্ডায় এডিটরজি বাংলা।
জিতুঃ একেবারেই নার্ভাস নই। টেনশনও নেই। আসলে নার্ভাসনেস বা টেনশন তৈরির সময়টা পেরিয়ে গিয়েছি। কাজটা করছিলাম যখন, সেই সময় টেনশন হতে পারত, নার্ভাস থাকতে পারতাম। এখন তো কাজটা হয়ে গিয়েছে। এখন নার্ভাস হয়ে তো আমি কিছু বদলে দিতে পারব না। কিছু ভালো বা খারাপ করতে পারব না। আমি আগাগোড়াই এমন। আসলে আমি মনে করি, যা হয়ে গিয়েছে তা নিয়ে ভেবে কোনও লাভই হয় না। তাই কোনও টেনশন নেই। একদম রিল্যাক্সড।
জিতুঃ আসলে আমি তো অভিজ্ঞই নই (হাসি)। ছোটবেলায় যখন স্কুলের ব্যাগ কাঁধে স্কুলে যেতাম, তখন ব্যাগটাকে বড্ড ভারী লাগত। আবার বড় হওয়ার পর মনে হয় ছোটবেলাটাই ভালো ছিল। এখন অনেক দায়িত্ব। অভিজ্ঞ হলে দায়িত্ব বাড়ে। আমি তো অভিজ্ঞই নই, তাই দায়িত্বও নেই।
যখন কাজ শুরু হয়েছিল তখন খুব চাপ হয়েছিল। কী করে করব ভাবছিলাম। এত বড় জিনিসটাকে উতরে দিতে হবে, দর্শককে আনন্দ দিতে হবে, অনীক দাকে হতাশ করা চলবে না, এই সব চিন্তা ছিল। এখন চিন্তা করে কী করব! পরিচালক অ্যাকশন বলেছেন, কাট বলেছেন, তিনি খুশি হয়েছেন, আমিও কাজটা করে আনন্দ পেয়েছি খুব- এটাই আমার কাছে একটা খুব বড় পাওনা।
আরও পড়ুন, চার্লি চ্যাপলিনের পর তিনিই একমাত্র... সত্যজিৎ-এর সাত কাহন, রইল কিছু অজানা তথ্য
জিতুঃ আরে ধুর! এ তো একদম বাজে কথা। প্রথম পছন্দ, দ্বিতীয় পছন্দ এ-সব কথা তখনই আসে, যখন অন্তত দু'টো অপশন থাকে। পরিচালক তো আমাকে চিনতেনই না৷ এই চরিত্রটা করার কথা ছিল আবীরদার (চট্টোপাধ্যায়)। কিন্তু ডেট ক্ল্যাস করে। অনীক দত্ত আমাকে দেখেন একটা মিছিলে। এটা একদম কোইনসিডেন্স! সেই মুহূর্তে ডাকেন। আমাকে ছোটবেলার চরিত্রের জন্য অফার করা হয়। কম বয়সের সত্যজিৎ রায়ের চরিত্র অফার করা হয়। সে-দিনইএকটা বাইট দেওয়ার সময় আমাকে অনীক দত্ত লক্ষ্য করেন। আমার কথা বলার ভঙ্গিটা ওঁর মনে ধরে। আমি নাকি খানিকটা সত্যজিৎ রায়ের মতো করে কথা বলছিলাম! ঠিক যেন নিয়তির খেলা! এরপর লুক সেট হয়। তখনও পরিচালক জানতেন আমি কম বয়সের সত্যজিতের চরিত্র করছি। লুক সেটে উনি সিদ্ধান্ত বদল করেন। এর সঙ্গে আবীরদার ডেট না পাওয়া সহ বেশ কিছু সমীকরণ ছিল। আমার মতে আবীরদা টালিগঞ্জের প্রথম তিনজন অভিনেতার একজন। তাদের সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক। আমি পেয়েই আবীরদার বাবাকে ফোন করি৷
জিতুঃ আমি কাউকে দেখিনি আমায় দেখে নাক সিঁটকাতে। কেন আমি, কেন আবীর নয়, এমন প্রশ্ন আমি কারও মুখে শুনিনি৷ অপর্ণা সেন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সন্দীপ রায়- সকলকেই প্রশংসা করেছেন৷ তবে কারও আমাকে পছন্দ না হতেই পারে৷ তাঁর সেই অধিকার আছে। এটা গণতান্ত্রিক দেশ। ফেসবুকের ট্রোলের হাত থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমিতাভ বচ্চন, গ্রেগরি পেক কেউ ছাড় পাননি৷ আমি কোন ছাড়!