নব্বইয়ের দশক । বাংলা সিনেমাজগতে তখন দেবশ্রী, ঋতুপর্ণা, শতাব্দীদের রাজ । সেইসময় টলিউডে এন্ট্রি হল নতুন এক নায়িকার । রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় । ১৯৯৪ সালের 'মিস ক্যালকাটা' । মডেলিং দিয়ে কেরিয়ার শুরু । তারপর বাংলা সিনেমায় প্রথম ব্রেক । মুহূর্তেই ঝুমঝুম থেকে হয়ে উঠলেন রচনা । কিন্তু, কেরিয়ারের শুরুর দিকে ওড়িয়া, তামিল ও তেলুগুতে সবথেকে বেশি সিনেমা করেছেন । ২০০২-২০০৩ সালের পর থেকে টলিউডে পা জমাতে শুরু করেন নায়িকা । প্রসেনজিতের সঙ্গে জুটি বেঁধে একাধিক হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন টলিউডকে । তবে, প্রায় ৩০ বছরের কেরিয়ারে রচনা হয়তো সবথেকে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন দিদি নং ওয়ান-এ । শহর হোক বা গ্রাম...বঙ্গবাসীর কাছে তিনি রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে বেশি রচনা 'দিদি' । ৫০ পেরিয়েছেন বছর দুই আগেই । অথচ অভিনেত্রীকে দেখে বোঝার উপায় নেই । রচনা শুধু অভিনেত্রী, সঞ্চালিকা নন, একজন নেত্রী ও সাংসদও । রাজনীতি, শুটিং, ঘর..সব একা হাতে সামলাচ্ছেন । ৫২-তেও এত ফিট ! রচনার ছিপছিপে চেহারার পিছনে লুকিয়ে কোন রহস্য ? অভিনেত্রীকে এই প্রশ্ন অনেকেই করেছেন । ৫২তেও কীভাবে নিজেকে ফিট ও ফ্যাশনবেল রাখেন, সেই রহস্য ফাঁস করলেন রচনা নিজেই ।
রচনার মতো ছিপছিপে চেহারা কেই বা না চায় । ডায়েট, জিম, কোনও কিছু করেই ঠিক শেপে ফিরতে পারছেন না ? রচনার ফিট-মন্ত্রে কিন্তু জাদু হতে পারে । কীভাবে ? তার জন্য দু'টি জিনিস খেতে হবে । একটা হল নিম ও করলার জুস । আরেকটা হল অ্যালোভেরা-আমলা জুস । সকালে এই দু ধরনের জুস খাওয়া রচনার প্রতিদিনের রুটিন । সম্প্রতি, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন রচনা । সেখানে নো-মেক আপ লুকে দেখা যায় তাঁকে । চোখে চশমা, পরনে ক্যাজুয়াল টি-শার্ট ও প্যান্ট । ভিডিও তাঁকে বলতে শোনা যায়, রবিবার লেকের পাশে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন । তাই, সেদিন বাড়িতে নয়, প্রতিদিনের রুটিন পালন করলেন বাইরেই । অভিনেত্রীর এক হাতে নিম ও করলার জুস এবং আরেক হাতে অ্যালোভেরা জুস । রচনা জানান, দু'ধরনের জুসই খেতে ভীষণ তেতো । কিন্তু শরীর ঠিক রাখতে গেলে খেতে তো হবেই ।
কীভাবে বানাবেন এই দুই ধরনের জুস, জেনে নিন
নিম-করলার জুস
নিম পাতা ভাল করে ধুয়ে ও করলা ছোট করে কেটে মিক্সিতে দিয়ে দিন । তারপর জল দিয়ে পেস্ট করে জুস বানিয়ে নিন । তারপর ওই জুসে অল্প লেবুর রস দিয়ে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে নিম-করলার জুস
অ্যালোভেরা-আমলা জুস
অ্যালোভেরা-আমলা জুস কীভাবে তৈরি করবেন ? একটা মিক্সিতে অ্যালোভেরা, আমলা, নিমপাতা, আদা, বিটনুন ও জল দিয়ে পেস্ট করে অ্যালোভেরা-আমলা জুস বানিয়ে নিন ।
স্বাদ অত্যন্ত তেতো, কিন্তু দুই ধরনের জুসের গুণ অনেক । নিম-করলার জুস ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী । রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে । রক্ত পরিষ্কার রাখে । রক্ত থেকে টক্সিন বের করে রক্তকে ডিটক্সিফাই করে । নিম, করলায় ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে । এছাড়া ত্বক ও চুলের জেল্লা বাড়ে ।
অন্যদিকে অ্যালোভেরা-আমলা জুসেও রয়েছে নানা উপকারিতা । ওজন কমাতে সাহায্য করে এই বিশেষ ধরনের জুস । রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে । চুল থেক পায়ের নখ পর্যন্ত...সবেতেই উপকারিতা রয়েছে । আমলা-অ্যালোভেরা জুস প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে । যা আপনার শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে ।
আপনিও রচনার মতো প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই দুই ধরনের রস খেতে পারেন । ওজন যেমন কমবে, শরীরও ফিট ও সতেজ থাকবে । তবে, তার আগে অবশ্যই কোনও পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন ।