ফাদার্স ডে-র ঠিক আগে পরে সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে যাবে নানা কার্ড, মেসেজ, শুভেচ্ছায়। কারোর আবার দিনভর স্মৃতিটুকুই সম্বল। বাবা আর সন্তানের সম্পর্ক নিয়ে তৈরি ছবিই বেছে বেছে এই দিনে দেখবেন অনেকেই। তবে বহু সিনেমার ভিড়ে একটা ছবি বারবার ফিরে আসবেই অনেকের স্মৃতির ক্যানভাসে।
মীরা নায়ারের ছবি নেমসেক। অশোক গাঙ্গুলির চরিত্রে ইরফান খান। ছোট্ট গোগোল বাবার সঙ্গে গাড়ি থেকে নেমে চলে যাচ্ছে সমুদ্রের কাছে। মা গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে নজর রাখছে ছেলের দিকে, একটু একটু করে ছোট হয়ে আসছে দুই অসমবয়সী বন্ধুর অবয়ব। মা খানিক দুশ্চিন্তায়। চেঁচিয়ে বাবাকে বলছেন, “খুব বেশি দূরে যেও না, ও খুব ছোট, চোখের আড়াল হয়ো না”।
বাবা ইরফান অনেকটা দূর এসে বুঝলেন ক্যামেরা ভুলে ফেলে এসেছেন গাড়িতে। সাময়িক আফসোস, তারপর গোগলকে বঝাচ্ছেন “ ক্যামেরা নেই। ছবিটা তোমায় মনে রাখতে হবে। মনে রেখে দিতে হবে আজীবন। দিনটা মনে রেখো গোগোল। মনে রেখো তুমি আর আমি এমন একটা জায়গায় এসেছিলাম, যেখান থেকে আর কোথাও যাওয়ার ছিল না আমাদের”।
আমাদের বাবারা ঠিক এই কথাগুলোই তো বলেছিলেন, অথবা বলতে চেয়েছিলেন, গুছিয়ে উঠতে পারেননি। বাবারা বলতে চেয়েছিলেন ‘মুহুর্তের আসলে ছবি থাকেনা, সময় ধরে রাখতে হয় মনে। আজীবন সেই ছবির সঙ্গে বোঝাপড়া চলে, চলে কথা বলা। মানুষ আসলে চলে যায়, থেকে যায় মুহুর্তরা, ভাবনারা। আমাদের শরীর বুড়িয়ে গেলেও মনের ভেতরে থেকে যায় ছোট্ট গোগোল, আর বাবার সঙ্গে গোগোলের ওই পথ চলাটুকু। গাড়ি থেকে নেমে ওই পাথরে আছড়ে পড়া ঢেউ পর্যন্ত পথ, ওটাই জীবন…! ওই পথটুকুই আসলে বারবার হাঁটি আমরা। ফিরে আসি গাড়ির কাছে। আবার যাই, ফিরি, যাই। কখনও একা, কখনও সঙ্গে আরও কেউ…