একদিন বা দুদিন নয়। একমাস বা দুমাস নয়। ভারত ও ভারতবাসীর সঙ্গে লতা মঙ্গেশকরের পরিচয় দীর্ঘ সাত দশকের বেশি সময়ের। রেকর্ড প্লেয়ার থেকে ডিভিডি- এটাই ছিল তাঁর বিস্তার। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে জন্ম ছোট্ট লতা বলিউডে সবার কাছে হয়ে গিয়েছিলেন দিদি।
যাঁর গানে একদিন চোখ ভিজেছিল ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরুর। আজ সেই লতার প্রয়াণে ভারতের চোখে জল। ভারতরত্ন নেই। ভাবতেই পারছে না কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী।
নিজের শহর
জীবনের একটা দীর্ঘ সময় তিনি কাটিয়েছেন মুম্বইয়ে। কিন্তু জীবনের প্রথম ১৬ বছর লতা মঙ্গেশকর বেড়ে উঠেছিলেন মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরে। সেখানেই তাঁর জন্ম।
হেমা থেকে লতা
প্রথম নাম ছিল হেমা। কিন্তু সেই নাম বদলে রাখা হয়েছিল লতা। অনুপ্রেরণা ছিলেন সেইসময়ের বিখ্য়াত নাট্য অভিনেত্রী লতিকার থেকে। গোয়ার একটি গ্রাম মঙ্গেশি। সেই থেকে তাঁর পদবি জুড়ে হয়েছিল লতা মঙ্গেশকর।
একদিনের স্কুল
সুর ছুটছিল তাঁর রক্তে। ছোট বোন আশার হাত ধরে স্কুলে এসেছিলেন গান শিখতে। কিন্তু ওই একদিন। কিন্তু শিক্ষিকার তিরস্কারে তিনি স্কুল ছেড়েছিলেন, আর ফিরে যাননি।
১৯৪২, প্রথম রেকর্ড
মারাঠি ছবি। নাম কিতি হাসাল। গায়িকা লতা মঙ্গেশকরের জীবন শুরু। আর শুরুতেই ধাক্কা। কারণ, ওই সিনেমায় গায়িকা লতার গান আর শোনা যায়নি। কারণ, তাঁর প্রথম রেকর্ড করা গান বাদ দেওয়া হয়েছিল সিনেমা থেকে।
সিনেমায় ছোট্ট মেয়েটা
গানের আগেই অবশ্য মারাঠি দর্শকরা দেখে ফেলেছিলেন ছোট্ট একটি মেয়েকে। পাঁচ বছর বয়সে সিনেমায় হাতেখড়ি লতার। মারাঠি ছবির নাম ছিল সংগীত নাটক। ১৯৪৫ সালে মুক্তি পেয়েছিল বড়ি মা। শিশু শিল্পী বলিউডে আত্মপ্রকাশ লতা মঙ্গেশকরের।
চোখ ভিজল নেহরুর
দিনটা ছিল ২৭ জানুয়ারি। সালটা ১৯৬৩। মানে ভারত-চিন যুদ্ধের ঠিক একবছর পর। দিল্লির রামলীলা ময়দানের নিস্তব্ধতা চিরে বেজে উঠল একটা গান। 'অ্য়ায় মেরে ওতানকে লোগো'। গায়িকা লতা মঙ্গেশকর। প্রথম সারিতে বসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু। শোনা যায়, লতার কণ্ঠে এই গান শুনে চোখ ভিজেছিল নেহরুর। কবি প্রদীপের কলমে এই গানে সুর দিয়েছিলেন সি রামচন্দ্র। যা নিবেদন করা হয়েছিল ভারত-চিন যুদ্ধে নিহত ভারতীয় জওয়ানদেরকে।
শেষ রেকর্ডিং ৯০ বছর বয়সে
করোনা তখনও ভারতে হানা দেয়নি। ২০১৯ সালে ভারতীয় জওয়ানদের জন্য ফের মাইক্রোফোনের সামনে গান গাইলেন তিনি। তিনি ৯০ বছরের লতা মঙ্গেশকর। 'সৌগন্ধ মুঝে ইস মিট্টি কা'- এটা ছিল তাঁর শেষ প্লে-ব্যাক।