১২ জানুয়ারি। আজকের দিনেই ব্রিটিশের হাতে মৃত্যুবরণ করেছিলেন বীর বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্য সেন। ক্ষীণকায় এক অঙ্কের শিক্ষকের নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রামীরা অধুনা বাংলাদেশের চট্টগ্রামে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। প্রবল প্রতাপান্বিত ব্রিটিশ শাসকের কবল থেকে কয়েকদিনের জন্য মুক্ত হয়েছিল চট্টগ্রাম। সূর্য সেনের নেতৃত্বে উড়েছিল স্বাধীনতার পতাকা।
১৮৯৪ সালের ২ মার্চ চট্রগ্রামেই জন্ম। বহরমপুর কেএন কলেজে পড়ার সময়েই ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সশস্ত্র বিপ্লবীবাদী ধারাটির সঙ্গে জড়িয়ে পড়া। সূর্য সেন বিশ্বাস করতেন, একমাত্র সশস্ত্র সংগ্রামের পথেই ভারতের স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব।
Prithvi Shaw:দারুণ সাফল্যের পরেও টিম ইন্ডিয়া থেকে বাদ, নীরবতা ভাঙলেন পৃথ্বী শ
চট্টগ্রামের স্কুল শিক্ষকের প্রখর ব্যক্তিত্ব, অজেয় মনোবল, প্রবল সাহস ও দেশপ্রেমের টানে একে একে জড়ো হতে লাগলেন গণেশ ঘোষ, অনন্ত সিংহ, লোকনাথ বল, অম্বিকা চক্রবর্তীর মতো বিপ্লবীরা। পিছিয়ে রইলেন না মেয়েরাও৷ এলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্তের মতো অনেকে। মাস্টারদার নেতৃত্বে গড়ে উঠল ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, চট্টগ্রাম শাখা।
এর পরের ঘটনা ভারতের স্বাধীনতার সংগ্রামের অন্যতম উজ্জ্বল অধ্যায়। সূর্য সেনের নেতৃত্বে ঝড় তুলে দিলেন বিপ্লবীরা। একের পর এক আঘাতে কেঁপে উঠল ব্রিটিশ। অসংখ্য শহীদের রক্তে চট্টগ্রামের বুকে রচিত হল নতুন ইতিহাস। ১৯৩৩ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি গৈরলা গ্রাম থেকে এক ভারতীয়র বিশ্বাসঘাতকতায় ধরা পড়লেন মাস্টারদা।
১৯৩৪ সালের ১২ই জানুয়ারি মধ্যরাতে সূর্য সেন ও তাঁর সহযোদ্ধা তারকেশ্বর দস্তিদারের ফাঁসি দেওয়ার নির্দেশ ছিল আদালতের। জেলে তাঁদের ওপর চলে নির্মম অত্যাচার। অভিযোগ, হাতুড়ি দিয়ে মাস্টারদার দাঁত ভেঙ্গে দেওয়া হয়। নির্মম ভাবে পিটিয়ে শরীরের বহু হাড় ভেঙে দেওয়া হয়। প্রবল অত্যাচারে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। এরপর তাদের অর্ধমৃতদেহ দুটি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।