মৃণাল সেনের ৯৯ তম জন্মদিবসে ছবির ঘোষণা হয়েছিল। সেই থেকেই অপেক্ষার প্রহর গোনা শুরু। বাংলার কিংবদন্তি পরিচালকের জীবন এবং যাপন পর্দায় ফুটিয়ে তোলার সাহস দেখিয়েছেন সৃজিত, দোসর হয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী। অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান হল রবিবার। প্রকাশ্যে এল বহুপ্রতীক্ষিত ট্রেলার।
ট্রেলারের শুরুতেই চঞ্চলের কণ্ঠে মৃণালের স্বগতোক্তি। ‘মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভের চাকরিটাই ভাল ছিল’ । সালটা ১৯৫৫, বাংলা ছবির দুনিয়ায় তখন সাড়া ফেলে দিয়েছে একটাই নাম-সত্যজিৎ রায়। তখন ‘পথের পাঁচালি’র মর্ম বা গুরুত্ব দেরিতে হলেও বুঝে ফেলেছে বাঙালি। তখন মৃণালের প্রথম ছবি ‘রাতভোর’ চূড়ান্ত ফ্লপ হয়। ফের মৃণালকে সৃজিত বলিয়ে নিলেন, ‘আমি সিনেমা বানানো ছেড়ে দেব। আমি গল্প বলতে শিখিনি।’
এই ছবিতে মৃণালের স্ত্রী গীতা দেবীর ভূমিকায় মনামি ঘোষ। মনামি বললেন, ‘ঠিক যেটা করতে চাও, সেটাই করো। আপোষ করবেন না’। আপোষের পথে হাঁটেননি মৃণাল। সেসময় তাঁর ছবি বানানোর স্টাইল বিপুল সমালোচিত হলেও, মৃণাল মনে করতেন, ‘যে গল্পটা যেভাবে বলতে চাই, সেভাবেই বলব। কারণ ভরপেট খাওয়ার থেকে শান্তিতে ঘুমনো অনেক বেশি জরুরি।’ তিনি আরও বলছেন, ‘আমি জানি আমার সিনেমায় হয়তো কোনও পালিশ নেই, হয়তো ক্রুড, হয়তো কাঁচা, হয়তো নিটোল শৈল্পিকভাবে গল্প বলার নিয়ম মানে না। হয়তো শুধুমাত্র ছেঁড়া প্যামফ্লেট, কোনও লেদার বাউন্ড ক্লাসিক নয়। কিন্তু শুধুমাত্র মহাকালের মুকুটের লোভে, আমি বর্তমানের সঙ্গে বেইমানি করতে পারব না!’
ট্রেলার দেখে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে দর্শকদের, মিলছে এমন প্রতিক্রিয়াও। শেষ সময়ে, নিজের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন মৃণাল, একটি দৃশ্যে তাঁকে নগ্নও দেখানো হয়েছে। দেখানো হয়েছে, রবি ঠাকুরের শেষ যাত্রায় দাঁড়ি ছিঁড়ে নেওয়ার একটি দৃশ্যও।