আর তিনি ছবিকে কথা বলাতেন। সেই ১২ বছর বয়স থেকে বাবার কিনে দেওয়া ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার অভ্যাস তিনি শেষ দিন পর্যন্ত ছাড়তে পারেননি। তাই ১৯৭৫ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত তাঁর ক্যামেরাতেই কথা বলেছে অঙ্কুর থেকে মুজিব। আজ সেই ছবি চিরকালের মতো ক্যান বন্দি হয়ে ভারতীয় সিনেমার অনন্য দলিল রয়ে গেল। প্রয়াত শ্যাম বেনেগাল। বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
দীর্ঘ সময় ধরেই তিনি কিডনির অসুখে ভুগছিলেন। ডায়ালিসিস নিয়েও গত বছর তিনি তৈরি করেছিলেন মুজিব দ্য মেকিং অফ দ্য নেশন। তবে শুরুটা হয়েছিল ১৯৭৫ সালে অঙ্কুর দিয়ে। সেখান থেকেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন ভারতীয় সিনেমার বনস্পতি।
একদিকে যখন বলিউডে কর্মাসিয়াল সিনেমার ঝড়। তখন প্যারালাল সিনেমাতেও ওম পুরী, নাসিরুদ্দিন শাহদের ইমেজে অ্যাংরি হিরোর রূপ তৈরি করতে পেরেছিলেন শ্যাম বেনেগাল। তাঁর হাতেই শাবনা আজমি, স্মিতা পাতিল, দীপ্তি নাভালরা খুলে দিয়েছিলেন বলিউডের অন্য জ্বানালা। আর যে শশী কাপুরকে ভারতীয় সিনেমা সবসময় দেখেছে একজন স্ফট হিরো হিসাবে, তাঁকে দিয়ে ভারতীয় সিনেমার দর্শন বদলে দেওয়ার কারিগরও সেই শ্যাম বেনেগাল। ১৯৮০ সালে মুক্তি পাওয়া জুনুন, বলিউডের এক মাইল ফলক।
হায়দরাবাদে জন্ম। সেখান থেকে স্বপ্ননগরী। সিনেমার পাশাপাশি সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করে ফেলা। এই প্রজন্মের কাছেও তাঁর লেন্সে ধরা পড়েছিল কাপুর কন্যা করিশ্মার রূপ। গোবিন্দার ভেলপুরী গার্ল জুবেদায় এক অন্য রূপ।
শ্যাম বেনেগালদের মৃত্যু হয় না। এমনটাই মনে করেন তাঁর হিরো নাসিরুদ্দিন শাহ। তাঁর চোখে এখনও শ্যামের তৈরি সব ফ্রেম ভেসে আছে। বক্তা দীপ্তি নাভাল। অমিতাভ বচ্চন থেকে কমল হাসান, বেনেগালের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বলিউড।
গত নয় দিন আগেই নব্বই বছরে পা দিয়েছিলেন তিনি। বাড়িতেই পার্টিতে ছিলেন তাঁর সতীর্থরা। শ্যাম আজ চিরন্তন লোকে। রয়ে গেল এই ছবি। সত্যিই ছবি কথা বলে। কথা বলাতেন দাদা সাহেব শ্যাম বেনেগাল।