এবার মীরের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি দিলেন তাঁর সতীর্থ শ্রী বসু। যাঁকে আপামর রেডিও প্রেমী চেনেন মির্চি শ্রী হিসেবেই। উল্লেখ্য, গতকালই 'রেডিও মির্চি'-এর সঙ্গে তাঁর ২৫ বছরের যাত্রাপথে ইতি টানার ঘোষণা করেন মীর আফসার আলি।
রবি ঠাকুরের 'শেষ নাহি যে' গানের বিখ্যাত লাইন 'ফুরায় যা তা, ফুরায় শুধু চোখে' দিয়ে শুরু হয়েছে মির্চি শ্রী-এর এই চিঠি। মীরের উদ্দেশ্যে তিনি লিখেছেন, মানুষকে চমকে দেওয়া তোমার বরাবরের স্বভাব। সে তোমার কৌতুকের দ্বারাই হোক বা গতকালের পোস্টটার মত। কী লিখব তোমায় নিয়ে? কোথা থেকে শুরু করব আর কোথায় গিয়ে শেষই বা করব? ১৭ বছরের স্মৃতি, প্রতিদিনের প্রতিটি মুহূর্ত, সে কি বড় কম সঞ্চয়? বিশেষত তোমার মত একজন মানুষকে গুরু-বন্ধু-মেন্টর হিসেবে এত বছর ধরে এত কাছ থেকে পাওয়া কি বড় কম সৌভাগ্যের কথা?
এরপরেই নিজের কোনও এক ব্যক্তিগত কষ্টের কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, নিজেকে শিকড় থেকে উপড়ে নিয়ে বাঁচা কতটা কষ্টের সেটা আমি ভালই জানি। তোমার আমার কাছে, মির্চি তো ওই গাছের শিকড়ের মতই। মাত্র ৫মাস আগে আমি যে অনুভূতির মধ্যে দিয়ে গেছি, আজ তুমি সেই একই অনুভূতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছ হয়ত ক্যাপ্টেন। যেন একমুহূর্তে ছোটবেলা থেকে বেড়ে ওঠা বাপের বাড়ির উঠোন ছেড়ে বাইরে পা রাখা।
চিঠির ছত্রে ছত্রে ভাল লাগা-মন খারাপ-আবেগ উজাড় করে দিয়েছেন এই রেডিও জকি। চিঠিটি পড়লেই বোঝা যায়, দীর্ঘদিনের যাত্রাপথে মীরের উপস্থিতি কতটা প্রভাবিত করেছিল তাঁর সতীর্থদের। মীরের উপস্থিতিতে কর্মক্ষেত্র থেকে কখন যে পরিবারের রূপ নিয়েছে রেডিও মির্চি, তা যেন বুঝতেই পারেননি সতীর্থরা।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালে মীর তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একটি পোস্ট করেন। সেখানেই দেখা গেল, আকাশবাণীতে কাজ করার সময়ের মীরের একটি সাদাকালো ছবি। সেই ছবির পাশে মীর লিখেছেন, '৬ অগাস্ট ১৯৯৪ থেকে ৩০ জুন ২০২২। রেডিওর জগতে সক্রিয় থাকা ২৭ বছর। এই ছবিটা আকাশবাণীতে প্রথম দিনের। ৬ই অগাস্ট ৯৪... টাইমস এফএম। আমায় শোনার জন্য সবাইকে ভালোবাসা ও ধন্যবাদ। তবে, মির্চি ছেড়েছি। রেডিও নয়। কষ্ট হচ্ছে, একটু ওই ৯৮.৩% মতো। একেবারে শেষ লাইনে লিখেছেন, ‘গল্পের পরবর্তী অংশ ব্রেকের পর।’ আর এই লাইনের মধ্যে কোনও টুইস্ট আছে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সেই টুইস্ট জানার জন্যই আপাতত, অধীর আগ্রহে বসে রয়েছেন অনুরাগীরা।