গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকির । শনিবার দশেরার অনুষ্ঠান চলাকালীন তাঁর উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা । ইতিমধ্যে ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে দু'জনকে । বাবা সিদ্দিকির উপর হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং । তাঁদের দাবি, বাবা সিদ্দিকির মৃত্যুর জন্য দায়ী একমাত্র সলমন খান । কারণ, সলমনের সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক ছিল সিদ্দিকির । তাই সলমনকে যাঁরা সাহায্য করবে, তাঁদের তৈরি থাকার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে । এদিকে, বিষ্ণোই গ্যাংয়ের এই বার্তার পরই সলমনের নিরাপত্তা আরও আঁটসাঁট করা হয়েছে । জানা গিয়েছে, রবিবারের সব মিটিং ক্যানসেল করে দিয়েছেন সলমন ।
দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে লরেন্সের টার্গেটে রয়েছেন সলমন খান । বারবার প্রাণে মেরে ফেরাক হুমকি দেওয়া হয়েছে সলমনকে । তারপর থেকেই মুম্বই পুলিশের তরফে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয় । সুপারস্টারকে ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা দেওয়া হয় । তবে, এবার বাবা সিদ্দিকির মৃত্যুর পর বিষ্ণোই গ্যাংয়ের বার্তায় আরও সতর্ক মুম্বই পুলিশ । সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে সলমন খানকেও । একইসঙ্গে ভাইজানের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে । সব কাজ বন্ধ, সব মিটিং বাতিল । একপ্রকার এখন গৃহবন্দী সলমন ।
ল্লেখ্য, পূর্ব বান্দ্রায় ছেলে জিশানের অফিসের বাইরে দশেরা উপলক্ষে বাবা সিদ্দিকি বাজি ফাটাচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁকে লক্ষ্য করে ৯.৯ এমএম পিস্তল থেকে গুলি ছোড়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাড়ি করে তিন জন দুষ্কৃতী এসেছিল। তাঁদের প্রত্যেকের মুখ রুমাল দিয়ে ঢাকা ছিল। সিদ্দিকির বুকে এবং পেটে গুলি লাগে। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বাবা সিদ্দিকিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । কিন্তু, প্রচুর রক্তপাতের কারণে তাঁকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি । রাত ১১.২৭ মিনিটে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় ।
ঘটনায় দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের নাম কর্নেইল সিংহ এবং ধরমরাজ কাশ্যপ। এক জন উত্তরপ্রদেশ এবং এক জন হরিয়ানার বাসিন্দা। জেরার মুখে দু’জনই স্বীকার করে নিয়েছেন, তাঁরা বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য। এছাড়া, বিষ্ণোইয়ের তরফেও হামলার দায় স্বীকার করে নেওয়া হয় ।
উল্লেখ্য, সলমনের খুব কাছের মানুষ ছিলেন বাবা সিদ্দিকী । শাহরুখ ও সলমনকে নাকি মিলিয়েছিলেন বাবা সিদ্দিকীই । স্বাভাবিকভাবে তাঁর মৃত্যুর খবরে ভেঙে পড়েন সলমন । খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে যান সলমন খান । হাসপাতাল থেকে বেরনোর সময় বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল ভাইজানকে । বলিউড ও বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনেরাও শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন ।
এর আগে এপ্রিল মাসে সলমন খানের বাড়ির বাইরে গুলি চালিয়েছিল লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং । দায়স্বীকার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকিও দেওয়া হয় । সেইসময় পোস্টে লেখা হয়েছিল, "আমাদের উপর হওয়া অত্যাচারের নিষ্পত্তি চাই। আজ যা হয়েছে, তা শুধুই একটা ঝলক ছিল। যাতে তুমি বুঝতে পারো, আমরা কতদূর যেতে পারি। এটাই ছিল তোমাকে দেওয়া শেষ সুযোগ। এরপর গুলিটা তোমার বাইরে চলবে না।" গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই সলমনকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি বারবার দিয়েছে । এমনকি, তাঁর শাগরেদরা সলমনের বাড়িও জরিপ করে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে ।