কলকাতার বিখ্যাত স্বর্ণ ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে। পারিবারিক ব্যবসা নয়। তিনি চেয়েছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে। কলেজে পড়তে পড়তে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাঁর নাম পুষ্পরাগ চৌধুরী। কিন্তু তাঁর আর সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া হয়নি। কারণ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষ চলাকালীন তাঁকে একটি চরিত্রের জন্য পছন্দ হয়ে যায় পরিচালক প্রভাত রায়ের।
কলেজের একটি মাস্তান চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। আর এই অভিনয়ের সূত্রেই তিনি পুষ্পরাগ থেকে হয়ে উঠলেন বাংলার অত্যান্ত জনপ্রিয় অভিনেতা। তিনি টোটা রায়চৌধুরী। আসলে পুষ্পরাগ নামটা খুব সুন্দর। কিন্তু এই নাম সকল শ্রেণির দর্শকের কাছে কাছে জনপ্রিয়তা নাও পেতে পারত। সেই কারণেই তিনি পুষ্পরাগ থেকে হয়ে উঠেছিলেন টোটা। আজই তাঁরই আটচল্লিশতম জন্মদিন।
কলেজ পুড়ুয়া মাস্তানের পরের ছবিতেও তাঁকে বকে যাওয়া কলেজপড়ুয়ার চরিত্রে দেখা যায়। প্রভাত রায়ের পরপর দুটি ছবিতে খলনায়কের চরিত্রের পর তাঁকে হিরো হিসেবে পর্দায় নিয়ে আসেন অঞ্জন চৌধুরী। এরপর একে একে কখনও বড়পর্দা কখনও টেলিভিশন বারবার বিভিন্ন চরিত্রে নিজেকে ভেঙেচুড়ে গড়ে তুলেছেন তিনি। এরপর ঋতুপর্ন ঘোষের দুটি ছবি 'শুভ মহরত' আর 'চোখের বালি' অভিনয়ের সুযোগ আসে টোটার জীবনে। টলিউডের গণ্ডি পেরিয়ে টোটা পাড়ি দেন তামিল চলচ্চিত্রে। এরপর বাংলা, হিন্দি,তামিল, কন্নড় একাধিক ভাষায় কাজ করেছেন তিনি।
কখনও বাঙালির আইকনিক চরিত্র ফেলুদা, আবার কখনও লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্পে রোহিতদা। সব চরিত্রেই সমান ভাবে সব প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন টোটা। কাজ করেছেন সুজয় ঘোষ থেকে করণ জোহরের তৈরি বলিউডের সিনেমাতে। শুধু অভিনয় নয়, ডান্সার তো বটেই বলিউডের রণবীর সিংয়ের সঙ্গে করণ জোহরের 'রকি অউর রানি কী প্রেম কাহানি' ছবিতে একজন দাপুটে কত্থক নৃত্যশিল্পীর ভূমিকায়ও সমান ভাবে তাক লাগিয়েছেন টোটা রায়চৌধুরী। যে নাচের ক্লিপিংস মুহূর্তেই ছাপ ফেলেছিল তরুণ প্রজন্মের মনে। আর এই নাচ শিখতে নাকি তাঁর সময় লেগেছিল মাত্র ৪০ দিন।