শ্রদ্ধাকে খুন করার পরেও আফতাব পুলিশি জেরার মুখে সম্পূর্ণ ভাবলেশহীন ছিল। শান্তভাবেই সে পুলিশের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেয়। জেরার সময় তার চোখেমুখে কেনও বিচলিত হওয়ার লক্ষণ ধরা পড়েনি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত একটি প্রতিবদন থেকে একথা জানা গিয়েছে।
দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে মহারাষ্ট্রের পালঘর জেলার ভাসাই থানার পুলিশ আফতাবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। গত সেপ্টেম্বর মাসে আফতাবের লিভ-ইন পার্টনার শ্রদ্ধার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে লক্ষণ নাদার নামে এক ব্যক্তি৷ শ্রদ্ধার ওই বন্ধু পরামর্শ দেন, তাঁর মেয়ের নামে মিসিং ডায়েরি করা উচিত। যেহেতু ঘটনাটি দিল্লিতে ঘটেছে তাই মহারাষ্ট্র পুলিশ প্রথমে ডায়েরি নিতে চায়নি। এরপর শ্রদ্ধার বাবা এক সিনিয়র পুলিশ অফিসারের দ্বারস্থ হন। এরপর অক্টোবরে পুলিশ সুয়োমোটো কেস দিয়ে তদন্ত শুরু করে।
পুলিশ প্রথমে শ্রদ্ধার পরিবারের সদস্যদের এবং লক্ষণকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তা থেকেই আফতাবের নাম উঠে আসে। শ্রদ্ধার কল রেকর্ড খতিয়ে দেখে জানা যায়, সে এবং আফতাব হিমাচল প্রদেশে গিয়েছিল। সেখান থেকে তারা দিল্লিতে আসে। বদ্রি নামে এক ব্যক্তির কথাও জানা যায়। দিল্লির নতুন ফ্ল্যাটে ওঠার আগে তার ফ্ল্যাটেই আফতাব এবং শ্রদ্ধা ছিল।
এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, আফতাবকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে জানায়, ২০২০ সালে শ্রদ্ধার মা মারা যাওয়ার পর থেকে শ্রদ্ধা খুব হতাশ হয়ে পড়ে। বিভিন্ন ছোটখাটো বিষয়ে সে ঝগড়া করত। গত মে মাসে শ্রদ্ধা তাকে ছেড়ে চলে যায়।কিছুদিন আগে সে ফিরে আসে৷ নিজের যাবতীয় জিনিসপত্র নিয়ে আবার চলেও যায়।
সিনিয়র ইন্সপেক্টর সম্পতরাও পাটিল জানিয়েছেন, জেরার সময় আফতাব অত্যন্ত শক্ত ছিল। সে ধারণা করতে পারেনি পুলিশ তাকে জালে ফেলতে পারবে।
আফতাবে বয়ানের সঙ্গে ফোনের কল রেকর্ড এবং অন্যান্য তথ্য না মেলায় পুলিশের সন্দেহ জোরাল হয়। শ্রদ্ধা কেন দু'মাস ফোন বন্ধ রেখছে, তারও কোনও সদুত্তর মেলেনি। এরপর দিল্লি পুলিশ রাজধানীতে মহারাষ্ট্র পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে আফতাবকে জেরা করে। সেখানেই সবকিছুর পর্দাফাঁস হয়।