১৯৬০ সালের ২৪ নভেম্বর কিউবার রাজধানী হাভানাতে জন্ম তাঁর। বলিভিয়ার জঙ্গলে ১৯৬৭ সালের ৭ অক্টোবর তাঁর বাবা চে গেভারা যখন মৃত্যুবরণ করছেন, তখন অ্যালেইদা গেভারা'র বয়স সবে সাত ছুঁইছুঁই। অ্যালেইদার সাড়ে ৪ বছর বয়সের সময় কিউবা ছাড়েন চে। তবু, বাবার স্মৃতি অ্যালেইদার মনে চিরঅমলীন। তবে, শুধু চে-র জ্যেষ্ঠ কন্যা হিসেবেই নন। নিজের পরিচয়েও যথেষ্ট পরিচিত ও সম্মানিত অ্যালেইদা। হাভানার উইলিয়াম সোলার চিলড্রেন'স হসপিটালের খ্যাতনামা চিকিৎসক তিনি। কাজ করেছেন নিকারাগুয়া, অ্যাঙ্গোলা এবং ইকুয়েডরের মতো পিছিয়ে পড়া দেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্য নিয়েও।
বাবা'র রাজনৈতিক আদর্শের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যোগ না থাকলেও, কমিউনিজমের মূল কথা সলিডারিটি বা সংহতিকে নিজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশিয়ে দিয়েছেন অ্যালেইদা। এর সবথেকে বড় প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল কয়েক দশক আগে। ঠিক যে সময় আফ্রিকার একাধিক দেশে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে গিয়েছিল 'ইবোলা'। নিজের একটি লেখায় সেই ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে অ্যালেইদা লেখেন- 'কিউবা সলিডারিটির দেশ। সহ-নাগরিকের পাশে দাঁড়ানোই এই দেশের মানুষের অভ্যাস। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এই অভিজ্ঞতা মানুষ হিসেবেও নিজেকে অনেক আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। নিকারাগুয়ার বিপ্লবের পর ফিদেল কাস্ত্রোর ডাকে আমি যখন আফ্রিকাই যাই, তখন আমার মাত্র ২৩ বছর বয়স। কিউবায় থেকে যুদ্ধের ভয়াবহতা সম্বন্ধে কোনও ধারণাই ছিল না তার আগে। মেডিক্যালের লাস্ট ইয়ার। তবে, ওই অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছিল, মানুষ হিসেবে নিজেকে উন্নত করে তোলা আসলে একটা দৈনন্দিন অভ্যাস"।
উল্লেখ্য, এর আগে আমেরিকার গুয়ানতানামো বে'র জেলে বন্দি কিউবার পাঁচ বিপ্লবীর মুক্তির দাবিতে বিশ্বজুড়ে প্রচারের সূত্রে ১৯৯৮ সালে প্রথম কলকাতায় এসেছিলেন আলেইদা। তিন দিনের সেই সফরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে চে-কন্যাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। লঞ্চে চেপে গঙ্গা সফরও করেছিলেন তিনি।