সংসদে এবার বিরোধীদের চিন মিউজিক !
শাসন কালে এই প্রথমবার সেই অভিজ্ঞতা হল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের। এক দেশ, এক ভোট - এই বিল পেশ করতে গিয়ে লোকসভায় নরেন্দ্র মোদী অ্যান্ড কোম্পানিকে প্রথমবার এমন বিরোধী তোপ সহ্য করতে হল। যার নিট ফল লোকসভায় ধাক্কা খেয়ে এক দেশ, এক ভোটের ভাগ্য এখন যৌথ সংসদীয় কমিটির হাতে।
শুক্রবার শেষ হচ্ছে সংসদে শীত অধিবেশন। তার আগে এই কমিটি তৈরি করতে হবে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে। ৯০ দিনের মধ্যে ওই কমিটি তাঁকে রিপোর্ট জমা দেবে। সূত্রের খবর, লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে মোট ৩১ জনের কমিটি তৈরি করা হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, গত কয়েক বছরে সংসদে বিল পেশের ক্ষেত্রে সরকারকে কোনও রকম বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু ভোট দানের চরিত্র বদল করতে গিয়ে বিরোধীদের মনোভাব বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন অমিত শাহরা। তাই ১৯৮ জনের সামনে কার্যত পিছু হঠতে হয়েছে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন সিং মেঘওয়ালকে।
ভোটের চরিত্র বদলানো চলবে না। গোড়া থেকে এই ইস্যুতে এককাট্টা ছিল বিরোধী ইন্ডিয়া জোট। এর আগেও ভারতে লোকসভার সঙ্গে একসঙ্গে বিধানসভার ভোট হয়েছে। পাঁচের দশকের শুরু থেকে ছয়ের দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত এই দস্তুর প্রচলিত ছিল ভারতীয় গণতন্ত্রে। বিরোধীদের দাবি, নরেন্দ্র মোদী সরকার গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করতে মানন্ধারতার নীতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
এরমধ্যে আরও চাপে বিজেপি। হুইপ জারির পরেও লোকসভায় ছিলেন না শাসক দলের জনা কুড়ি সাংসদ। তার মধ্যে বাংলার পাল্লাই ভারী ছিল। জয়ন্ত রায়, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তনু ঠাকুরের মতো সাংসদরা একটা গুরুত্বপূর্ণ দিনে কেন উপস্থিত, তা লিখিত ভাবে জানতে চেয়েছেন বিজেপি সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
এক দেশ, এক ভোট নিয়ে কেন্দ্রের আনা সংশোধনী বিলকে যৌথ সংসদীয় কমিটির ঘরে ঠেলে লোকসভায় নৈতিক জয় দেখছেন বিরোধীরা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় এর উপর সিলমোহর বসতেই তার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সুর লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী থেকে বাকিদের।
তাহলে কী, এক দেশ, এক ভোট আইন হওয়ার আগে থেকেই মমতাকে সামনে রেখেই ইন্ডিয়া জোটে সলতে পাকানোর কাজ শুরু হয়ে গেল।