ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় দানা। আবহাওয়া দফতরের দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিমি হতে পারে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা।
মৌসম ভবনের তরফে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে সেখানে জানানো হয়েছে, ২২ অক্টোবর অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হবে। এবং বুধবার তা শক্তিবৃদ্ধি করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে ধীরে ধীরে ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোবে। এরপর পুরী, কটক, ভদ্রক সহ বিভিন্ন উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে আছড়ে পড়বে।
এদিকে বাঙালির অন্যতম বেড়ানোর ডেস্টিনেশন পুরী। সারা বছরই জগন্নাথধামে ভিড় জমান বাঙালিরা। বুধবার থেকেই ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাব পড়তে পারে পুরীতে। ফলে চিন্তা বাড়ছে বাঙালি সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত পর্যটকদের। এই পরিস্থিতি কী করণীয়?
পুরীতে কী কী সতর্কতা জারি করা হয়েছে?
ঘূর্ণিঝড় দানা-র প্রভাবের জন্য সৈকত শহর পুরী মঙ্গলবারের মধ্যেই কার্যত পর্যটকশূন্য করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার বিকেল থেকে কোনও পর্যটককে পুরীতে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এছাড়াও পুরী ও সংলগ্ন এলাকার স্কুলগুলিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত অফিসারদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সব হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকে আপদকালীন পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় থেকে পর্যটকদের রক্ষা করতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ওড়িশা সরকারের তরফে। এই বিষয়ে ওড়িশার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী সুরেশ পুজারী সোমবার জানিয়েছেন, পুরীতে যে সব পর্যটকরা রয়েছেন তাঁরা যেন অতি দ্রুত শহর ছাড়েন। তবে যাঁরা ফিরতে পারবেন না তাঁদের জন্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার কথাও জানানো হয়েছে।
ওড়িশা সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে ওড়িশায় সবথেকে বেশি পর্যটক গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে। ২০১৯ সালে সেখানে পর্যটকের সংখ্যা ছিল মোট ১ কোটি ৫৩ লাখ ৭ হাজার ৬৩৭ জন। যার মধ্যে ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৭০ জন ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে। যা মোট পর্যটকের ১৪ শতাংশ। অন্যদিকে ২০২০ সালে অর্থাৎ করোনাকালে মোট ৬ লাখ ৪৮ হাজার ১২৪ জন বাঙালি ওড়িশা বেড়াতে গিয়েছিলেন। যা সেই বছরের মোট পর্যটকের ১৪.০২ শতাংশ। এরপর পরবর্তী বছরগুলিতেও বাঙালি পর্যটকের সংখ্যা উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানেও সেখানে প্রচুর বাঙালি পর্যটক রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। দানা-র প্রভাবে যাতে কোনও পর্যটকের কোনও ক্ষতি না হয় তার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে ওড়িশা সরকার।
ওড়িশা সরকারের তরফে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় দানা-র জন্য কেউ বিপদে পড়লে ওই কন্ট্রোল রুমে ২৪ ঘণ্টা যোগাযোগ করতে পারেন। যার নম্বর ১৯২৯ এবং ৭৮০৯৮৯৬৬২১। এছাড়াও ৭২টি ট্রানজিট সেল্টার তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি ওড়িশা পর্যটন দফতরের যে হোটেলগুলি রয়েছে সেখানেও পর্যটকদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ওড়িশার উপমুখ্যমন্ত্রী প্রভাতী পারিধা জানিয়েছেন, পান্থনিবাস বা ওড়িশা টুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন এর যতগুলি হোটেল রয়েছে সেখানে যাবতীয় ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। ওড়িশায় আগত কোনও পর্যটক যাতে সমস্যা না হয় তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।