বৃহস্পতিবার রাতে ল্যান্ডফল ঘূর্ণিঝড় 'দানা'-র। মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, ল্যান্ডফলের সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। ওড়িশার ধামড়ায় ল্যান্ডফল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ওড়িশার উপকূলবর্তী একটি এলাকা ধামড়া। এর আগে ২০২১ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় 'যশ'-এর সম্মুখীন হয়েছিল ওই এলাকা। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট হওয়া ওই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছিল ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং বাংলাদেশে। সেই সময়ও ঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল ধামড়া। ফের কি একই পরিস্থিতি তৈরি হবে ওড়িশার উপকূলবর্তী ওই এলাকায়? সেই বিষয়ে চিন্তিত এলাকার বাসিন্দা এবং ওড়িশা সরকার।
ওড়িশা সরকারের তরফে জানানো হয়েছে 'দানা'-মোকাবিলায় ইতিমধ্যে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ধামড়া এলাকার সব বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্যত্র। তাঁদের থাকার জন্য অস্থায়ী ত্রাণ শিবির তৈরি করা হয়েছে। সাইক্লোন সেন্টারেও রাখা হয়েছে অন্যত্র।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার থেকেই গ্রামবাসীদের সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ত্রাণ শিবিরে খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিশুখাদ্যও রাখা হয়েছে সেখানে। কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বিদ্যুৎ দফতর থেকে শুরু করে টেলিকম যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলিকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আহত এবং অসুস্থদের চিকিৎসার জন্য পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। গবাদি পশুদেরও অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
শুধু ওড়িশা সরকার নয়, 'দানা' মোকাবিলায় একাধিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও। উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের ইতিমধ্যে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী ক্যাম্প এবং তৎপর রয়েছে প্রশাসন। একাধিক পদক্ষেপ নেওয়ার পরও আতঙ্ক কাটছে না বাসিন্দাদের। পূর্ব মেদিনীপুরের জুনপুট, কাঁথি সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় সবথেকে বেশি ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে। আর সেই কারণে কাঁথি ১ নম্বর ব্লকের ২৬টি জায়গায় খোলা হয়েছে ত্রাণশিবির।
জুনপুট একটি মৎস্য বন্দর। ফলে সেখানে প্রচুর সংখ্যক ট্রলার থাকে। ঝড়ের দাপটে যাতে ট্রলারগুলির না ক্ষতি হয় সেই কারণে ট্রলারগুলি বেঁধে রাখা হয়েছে। সমুদ্রের কাছাকাছি কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
জুনপুটের পাশাপাশি দীঘাতেও কঠোর প্রশাসন। সমুদ্রের ধারে পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানোর ক্ষেত্রে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সমুদ্রে যাওয়ার প্রতিটি রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। সিংহভাগ হোটেলই খালি রয়েছে।
ওড়িশার পুরী, ধামড়া, চাঁদিপুর এবং বাংলার দিঘা, জুনপুট, বকখালি, ডায়মন্ডহারহার, নামখানা, মৌসুনী সহ বিভিন্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি।