ভারতীয় সময় অনুযায়ী রবিবার গভীর রাতে উপচে পড়েছে কলম্বিয়ার (Colombia) রাজধানী বোগাতোর এস্টাডিও নেমেসিও কামাচো স্টেডিয়াম। লাতিন আমেরিকার এই দেশটিতে সদ্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়েছে। আর তাতেই ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন বামপন্থীরা (Left)। বাম মনোভাবাপন্ন পার্টিগুলোর জোট প্যাক্টো হিস্টোরিকা (হিস্টোরিকাল প্যাক্ট) দখল করেছে কলম্বিয়ার রাষ্ট্রক্ষমতা। রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন গুস্তাভো পেত্রো (Gustavo Petro)। তারপর লক্ষ লক্ষ মানুষকে উদ্দেশ্য করে নয়া রাষ্ট্রপতির বার্তা, “আপনারা ইতিহাস লিখেছেন। আমি আপনাদের মর্যাদা রাখব। বড় লোক আর এই দেশে আরও বড় লোক হবে না। যে মানুষ অভাবে কাটাচ্ছেন, তাঁদের ঘরে জ্বলবে শিক্ষা-স্বাস্থ্য-চাকরির রঙমশাল।”
গত তিন-সাড়ে তিন বছর ধরেই কলম্বিয়ার দক্ষিণপন্থী সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমশ তীব্র হচ্ছিল ক্ষোভ। যা গণ আন্দোলনের রূপ নিয়ে মাঝে মাঝেই আছড়ে পড়ছিল দেশটির বুকে। মূলত ছাত্র ও শ্রমিক আন্দোলনে উত্তাল হচ্ছিল কলম্বিয়া। এই সময়পর্বে অন্তত ৩১ জন আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়েছে। সেই তীব্র সরকার বিরোধিতার ফসলই ঘরে তুলেছেন বামেরা।
হিসেব বলছে, প্রায় ৫০.৪ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন পেত্রো। তাঁর বিরুদ্ধে দক্ষিণপন্থীদের প্রার্থী ছিলেন ধনকুবের রডলফো হার্নান্ডেজ। তিনি পেয়েছেন ৪৭.৩ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ গুস্তাভো পেত্রো হার্নান্ডেজকে হারিয়েছেন প্রায় সাত লক্ষ ভোটে।
আরও পড়ুন- USA shootout : আমেরিকায় ফের বন্দুকবাজের হামলা, নিহত এক কিশোর, জখম পুলিশ-অফিসার-সহ ৩
১৯৬০ সালে কলম্বিয়ার কর্ডোবায় জন্ম পেত্রোর। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি গেরিলা গ্রুপের সদস্য হন। ১৯৯১ সালে তিনি একটি নির্বাচনে চেম্বার অব রিপ্রেজেন্টেটিভ এর সদস্য হন। এরপর থেকে তিনি দীর্ঘদিন বিরোধী দলনেতা ও গেরিলা যুদ্ধের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বেশ কিছু সময়ের জন্য তিনি বেগোটার মেয়র পদ সামলেছেন। তাঁর শাসনকালে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর ফলে খুব দ্রুত কলম্বিয়ায় হত্যার ঘটনা হ্রাস পায়।
আবার এখন তাঁর হাতে বিরাট দায়িত্ব। দেশকে নতুন করে গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে পেত্রো দু'হাত আকাশে ছুড়ে যেন বলছেন, “এল পুয়েবলো ইউনিডো, জামাস সেরা ভেনসিডো।” অর্থাৎ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে, জয় হবেই হবে।