ভারতীয় রেলকে ‘দেশের হৃদপিণ্ড’ বলাই যায়। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারীকে দেশকে জুড়ে রেখেছে ভারতীয় রেল। যাতায়াতের জন্য দেশের কোটি কোটি মানুষ নির্ভর করে থাকেন ট্রেনের উপরেই। কিন্তু যাঁরা নিত্যযাত্রী, তাঁরা জানেন মাঝেই মাঝেই এর জেরে কত ভোগান্তি পোহাতে হয় তাঁদের। কখনও ট্রেন লেট, কখনও বাতিল, কখনও বা যাত্রাপথ বদল, কখনও বা দুর্ঘটনা। মানুষ কার্যত প্রাণ হাতে করে আজকাল ট্রেনে ওঠেন।
কিন্তু ট্রেনের গাফিলতিতে যাত্রীরা সমস্যায় পড়লে ভারতীয় রেলে তাঁরা অভিযোগ জানাতে পারেন। তিন বছর আগের এমনই এক অভিযোগের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ পেলেন এক যাত্রী। দীর্ঘদিনের আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে এই মামলা জিতে রেলের কাছে ক্ষতিপূরণ পান তিনি।
কী ঘটেছিল ঠিক?
মধ্য প্রদেশের জব্বলপুরের বাসিন্দা অরুণ কুমার জৈন ২০২২ সালে দিল্লির হজরত নিজামুদ্দিন যাওয়ার জন্য একটি ট্রেনের টিকিট কেটেছিলেন। সেখান থেকে তাঁর হজরত নিজামুদ্দিন পৌঁছনোর কথা ছিল ভোর ৪টে ১০ মিনিটে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৩ ঘণ্টা পর ট্রেনটি গন্তব্যে পৌঁছয়। এর জেরে সেখান থেকে ওই যাত্রীর যে আরেকটি ট্রেন ধরার কথা ছিল সেটি মিস হয়ে যায়। আর এর জেরে ওই ব্যক্তির গোটা পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
এরপরেই রেলের কনজিউমার ফোরামে ওই ব্যক্তি অভিযোগ জানান। রেলের গাফিলতিকে দায়ী করে আইনি লড়াই লড়েন ওই ব্যক্তি। তিন বছর কেস চলে, অবশেষে তিন বছর পর রেল দফতরকে দোষী সাব্যস্ত করে কনজিউমার ফোরাম। ওই ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে রেলওয়েকে ৭ হাজার টাকা দিতে বলে ফোরাম। এর মধ্যে ৮০৩ টাকা ছিল টিকিটের দাম, মানসিক হয়রানির জন্য ৫,০০০ টাকা, মামলার শুনানির খরচ বাবদ ২,০০০ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এমন ঘটনা আরও একবার ঘটেছিল, যখন এক ব্যক্তিকে একটি আস্ত ট্রেনই দিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় রেল। ভারতে, একজন অনন্য ব্যক্তি ছিলেন যিনি একটি ট্রেনের মালিক । তিনি কোনও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বা বড় ব্যবসায়ী নন, বরং একজন সাধারণ কৃষক ছিলেন। যিনি স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেসের মালিকানা পেয়েছিলেন, যা দিল্লি থেকে অমৃতসর পর্যন্ত চলে।
রেলওয়ে সেই সময় লুধিয়ানা-চণ্ডীগড় রেললাইন নির্মাণের জন্য সম্পূরণ সিং সহ অনেক কৃষকের কাছ থেকে জমি কিনেছিল। সে ক্ষেত্রে টাকা দেওয়া নিয়ে একটা বিতর্ক তৈরি হয়। বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আদালতে যান কৃষক সম্পূরণ সিং। কোর্ট দেড় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলে ওই ব্যক্তিকে। কিন্তু রেল তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায়, এরপর শুধু জমি নয়, পুরো ট্রেনের মালিক হয়ে যান কৃষক।