সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। সোমবার অর্থাৎ ১১ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করান। বিচারপরতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের পর বিচারপতি খান্না হলেন দেশের ৫১ তম প্রধান বিচারপতি। ৬ মাসের মেয়াদে তিনি দায়িত্ব সামলাবেন।
বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের পর বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের সবথেকে প্রবীণ বিচারপতি। অবসর নেওয়ার আগে নিয়ম অনুযায়ী বিচারপতি সঞ্জীব খান্নাকে প্রধান বিচারপতি পদে বসার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। সেইমতো দেশের প্রধান বিচারপতির চেয়ারে বসলেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না।
১৯৬০ সালের ১৪ মে জন্মগ্রহণ করেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। ১৯৮৩ সাল থেকে নিজেই আইনি পেশা শুরু করেন। শুরুতে তিনি দিল্লি বার কাউন্সিলের আইনজীবী ছিলেন। সাংবিধানিক আইন, ট্যাক্সেশন, অর্বিট্রেশন, বাণিজ্যিক আইন এবং পরিবেশ আইনে দক্ষ ছিলেন তিনি।
দিল্লি বার কাউন্সিলে আইনজীবী থাকার পর আয়কর বিভাগের সিনিয়র স্ট্যান্ডিং কাউন্সেল পদে ছিলেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। ২০০৪ সালে দিল্লির ন্যাশনাল ক্যাপিটল টেরেটরির জন্য তাঁকে ওই পদে নিয়োগ করা হয়।
বিচারপতি থাকাকালীন একাধিক একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছিলেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। তারমধ্যে অন্যতম হল, দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন। এছাড়াও কেন্দ্রের প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের ছাড়পত্র দিয়েছিলেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল, নির্বাচনী বন্ড অসাংবিধানিক, EVM-এর সঙ্গে ১০০ শতাংশ VVPAT স্লিপ মিলিয়ে দেখার মামলাও খারিজ করা মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
বিচারপতি হিসেবে খান্নার কর্মজীবন শুরু ২০০৫ সালে। সর্বপ্রথম দিল্লি হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত করা হয় তাঁকে। তারপর ২০০৬ সালে স্থায়ী বিচারপতি হন তিনি। ২০১৯ সালের ১৮ জানুয়ারি সঞ্জীব খান্না সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। যদিও তিনি-ই একমাত্র বিচারপতি যিনি অতীতে কোনও হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেননি।
৯ তারিখ বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের শেষ কর্মজীবন ছিল। সেই দিন তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে বিচারপতি খান্নার নাম প্রধান বিচারপতি হিসেবে প্রস্তাব করেন। সেই সুপারিশ অনুযায়ী সোমবার সকাল ১০টায় রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ বাক্য পাঠ করে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ২০২৫ সালের ১৩ মে অবসর নেবেন তিনি।
বিচারপতি খান্নার আরও একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি হংসরাজ খান্নার ভাইপো। তাঁর বাবা ছিলেন দিল্লি হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবরাজ খান্না।
বর্তামানে RG কর কাণ্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি চলছিল অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে। তার পরিবর্তে ওই মামলা বর্তমানে সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চে শুনানি হবে কিনা তা এখন দেখার।