ইনফোসিস প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির একটি মন্তব্য নিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। তিনি কর্মীদের সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজের পক্ষে কথা বলেছিলেন। আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে দৈনিক ১৪ ঘণ্টা কাজের প্রস্তাব দিল কর্নাটকের বেশ কিছু তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি। এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করতে শুরু করেছেন কর্মীরা। স্বাস্থ্য ইস্যু ও ছাঁটাই প্রসঙ্গ তুলে সরব হয়েছেন তাঁরা।
কর্নাটক সরকার যখন দোকান ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিয়মে সংশোধন আনার কথা ভাবছে, তখনই এই পরিস্থিতিতেই সেরাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কাজের সময় করা হোক ১৪ ঘণ্টা। ১২ ঘণ্টা মূল কাজের সময়, তার সঙ্গে ২ ঘণ্টা ওভারটাইম।
নয়া প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, আইটি/আইটিইস/ বিপিওর কর্মীদের দিনে ১২ ঘণ্টার বেশি কাজের অনুমতি দিতে হবে। কোনওভাবেই তা পর পর তিন মাসের নিরিখে ১২৫ ঘণ্টা অতিক্রম করবে না।
কর্নাটক স্টেট আইটি/আইটিইস এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন তথা কিটুর তরফে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে জানানো হয়েছে, আইটি সেক্টরের ৪৫ শতাংশ কর্মী অবসাদে ভুগছেন। ৫৫ শতাংশের শারীরিক সমস্যা হচ্ছে। ফলে কাজের সময় বাড়ালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। কর্মীদের যন্ত্র নয়, মানুষ হিসেবে দেখার আর্জিও জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে দেড় বছর আগেই সপ্তাহে তিনটে দিন ছুটি (three day weekend), চার দিন কাজ! এই ব্যবস্থায় ব্রিটেনে কাজের ট্রায়াল চলল টানা ছ'মাস। সারা বিশ্বে এত বড় আকারে ট্রায়াল এই প্রথম। ফলও মিলেছে হাতেনাতে। প্রথম দফার ট্রায়ালের ফলাফল বলছে, সপ্তাহে কাজের দিন কমিয়ে, ছুটির দিন তিন দিন করলে কর্মীদের থেকেও ভাল মানের কাজ পাচ্ছে সংস্থাগুলো।
২০২২ এর জুন থেকে ডিসেম্বর, এই ছ'মাসের জন্য একটি ট্রায়াল চালিয়েছে ৬১টি ব্রিটিশ ফার্ম। সংস্থাগুলির ২,৯০০ জন কর্মীর সাপ্তাহিক ৩৪ ঘণ্টা কাজ করেছে। কাজের সময় কমিয়ে দেওয়ার জন্য বেতনের কোনও অংশ কাটা হয়নি।
ট্রায়ালের ফলাফল বলছে, ৬১ টির মধ্যে ৫৬টি সংস্থায় এই সেট আপেই কাজ চালিয়ে যেতে চায়। কারণ, এই নতুন নিয়মে কাজ করার ফলে ৭১ শতাংশ কর্মীর স্ট্রেস কমেছে, কাজ নিয়ে সন্তুষ্টি বেড়েছে ৪৮ শতাংশ কর্মীর। এ ছাড়া, উদ্বেগ, ক্লান্তি, ঘুমের সমস্যাও অনেক কমেছে কর্মীদের। সব মিলিয়ে মানসিক এবং শারীরিরিক সার্বিক উন্নতি হয়েছে।