মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্টে রয়েছে RG কর মামলার শুনানি। আর ওই শুনানিতে অংশ নিতে চলেছেন ২০০-র বেশি আইনজীবী। তবে এখানেই শেষ নয়, আইনজীবীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
RG কর কাণ্ড নিয়ে প্রথমে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেই সময় মামলার তদন্তভার কলকাতা পুলিশের হাত থেকে CBI-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর ওই বিষয়টি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা শুনতে চায় শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি চলছে।
সুপ্রিম কোর্টে এই মামলাটির প্রথম শুনানি হয় ২০ অগাস্ট। শীর্ষ আদালতের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই শুনানিতে মোট ৯০ জন আইনজীবী অংশগ্রহণ করেছিলেন। এবং তারমধ্যে রাজ্যের তরফে ছিলেন মোট ২৪ জন আইনজীবী।
এরপর ২২ তারিখ ওই মামলার শুনানি হয়েছিল। সেইদিন রাজ্যের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মোট ২১ জন আইনজীবী। এবং মোট আইনজীবীর সংখ্যা ছিল ১২৭ জন।
এরপর তৃতীয় শুনানি হয় ৯ সেপ্টেম্বর। ওই দিন শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন মোট ২১০ জন আইনজীবী। অর্থাৎ দ্বিতীয় শুনানি থেকে তৃতীয় শুনানির দিন ৮৩ জন অতিরিক্ত আইনজীবী হাজির ছিলেন প্রধান বিচারপতির এজলাসে। এবং তৃতীয় শুনানিতে মামলার পক্ষ ছিল মোট ১২টি। রাজ্যের তরফে ২১ জন আইনজীবীই সওয়াল করেছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার অর্থাৎ ১৭ তারিখ এখনও পর্যন্ত ২১০ জন আইনজীবী অংশ নিতে চলেছেন। তবে ইতিমধ্যে একাধিক আবেদন জমা পড়েছে শীর্ষ আদালতে। যেখানে ওই মামলার অংশ হিসেবে যুক্ত হওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে আইনজীবীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার রাজ্যের হয়ে সওয়াল করবেন মোট ১৯ জন আইনজীবী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কপিল সিব্বল। নির্যাতিতার পরিবারের হয়ে সওয়াল করবেন আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও এই মামলার অংশ হয়েছেন। তাঁর হয়ে লড়বেন ৭ জন আইনজীবী। জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবী হয়ে লড়বেন ফিরোজ এডুলজি। এছাড়াও গাইঘাটার প্রতিবাদী শিক্ষক বরুণ বিশ্বাসের পরিবারের তরফেও এই মামলায় অংশ নেওয়া হয়েছে। তাঁদের হয়ে লড়বেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম।
তবে মঙ্গলবারের শুনানিতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী পরিবর্তন। বিগত তিনটি শুনানিতে তাঁদের হয়ে লড়েছেন গীতা লথুর। কিন্তু মঙ্গলবারের শুনানিতে লড়বেন সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং।
কেন ইন্দিরা জয়সিং গুরুত্বপূর্ণ?
জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের আলোচনার জন্য একাধিকবার পরিস্থিতি তৈরি হলেও শুধুমাত্র লাইভ স্ট্রিমিংয়ের শর্তের জন্য সেই বৈঠক ভেস্তে যায়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের অনেকে জানিয়েছেন, বর্তমানে প্রতিটি শুনানির যে লাইভ স্ট্রিমিং করা হয় তা চালু করার পিছনে ছিলেন ইন্দিরা জয়সিং। তিনি লাইভ স্ট্রিমিং চালু করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আর্জি করেন ২০২৩ সালে। তারপর প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সেই আর্জিকে মান্যতা দেয়। এবং লাইভ স্ট্রিমিং শুরু হয়।
আইনজীবীদের একাংশ মনে করছে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্রে লাইভ স্ট্রিমিংকেই গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে তুলে ধরতে চাইছেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা। আর সেই কারণেই সম্ভবত ইন্দিরা জয়সিংকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।
অন্যদিকে চিকিৎসকদের অপর একটি সংগঠন জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস ওয়েস্ট বেঙ্গল-ও এই মামলার পার্টি হয়েছেন। তাদের হয়ে সওয়াল করবেন করুণা নন্দী এবং সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়।