'ভোকাল ফর লোকাল'। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই স্লোগানের বড়সড় প্রভাব কি দীপাবলির বাজারেও? ভারতীয় পণ্য কেনার হিড়িকে চলতি বছরের দীপাবলির বাজারে ১.২৫ লাখ কোটি টাকা লোকসান চিনের। এমনই তথ্য প্রকাশ করেছে কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স।
দীপাবলি। আলোর উৎসবে মেতে উঠবে আপামর ভারতবাসী। প্রদীপ থেকে রং-বে রঙের আলো, পোশাক থেকে পছন্দের খাবার- নিজের জন্য অথবা প্রিয়জনের জন্য কেনাকাটা করেন সকলে। দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি বিদেশি পণ্যের দিকেও ঝোঁক থাকে অনেকের। অধিকাংশ ভারতীয়র মধ্যে চিনা পণ্যের দিকে নজর বরাবরই বেশি। দ্রব্যের মান কতটা ভালো সেনিয়ে মতানৈক্য থাকলেও দাম যে অনেকটাই কম সেনিয়ে কোনও দ্বিমত নেই।
দীপাবলির মরশুম শুরু হতেই লক্ষ্মীলাভ ভারতীয় ব্যবসায়ীদের। শুধুমাত্র ধনতেরাসের দিন আনুমানিক ৬০ হাজার কোটির ব্যবসায়িক লেনদেন হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স এর সেক্রেটারি প্রবীণ খান্ডেলওয়াল। এই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, দেশীয় পণ্যের প্রতি ঝুঁকেছেন সাধারণ মানুষ। চিনা দ্রব্য বয়কটের পথে হেঁটেছেন তাঁরা।
তাঁর দাবি, চলতি বছরের দীপাবলির বাজারে 'ভোকাল ফর লোকাল' আরও বেশি করে ফুটে উঠেছে। বর্তমানে প্রতিটি চিনা দ্রব্যই ভারতে তৈরি করা হচ্ছে। ফলে দেশীয় পণ্যের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে ভারতীয়দের। তাঁর বক্তব্য, যেহেতু দেশীয় পণ্যের দিকে ঝুঁকছেন সাধারণ মানুষ তার কারণে কমপক্ষে ১.২৫ লাখ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন শি জিনপিং-এর দেশ।
সম্প্রতি একটি তথ্য প্রকাশিত হয়েছে সর্বভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমে। সেখানে জানানো হয়েছে, ২০২২-২৩ সালে ভারতের সঙ্গে চিনের দ্বিমুখী বাণিজ্য কমে ৯৫ হাজার ৮ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা হয়েছে। ২০২১-২২ সালে যা ছিল ৯৭ হাজার কোটি কোটি টাকা। চলতি বছরের দীপাবলিতেও সেই ব্যবসায়িক লেনদেন আরও কমল।
ভারতের ব্যবসা-
দীপাবলির মরশুমে চিনা পণ্যের ব্যবসা হোঁচট খেলেও ভারতীয় সংস্থাগুলি লক্ষ্মীলাভ করবে বলে আশাবাদী CAIT। ওই ব্যবসায়ী সংগঠনটির আশা গোটা দেশব্যাপী প্রায় সওয়া চার লাখ কোটি টাকার ব্যবসা হতে পারে। তারমধ্যে শুধুমাত্র দিল্লিতেই ৭৫ হাজার কোটি টাকার ব্য়বসা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২০২৪ সালের দীপাবলির মরশুমে ব্যবসায়িক কেনা-বেচা নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছিল লোকাল সার্কেল নামে একটি সংস্থা। ওই সংস্থাটির দেওয়া রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ভারতীয়দের মধ্যে উপহার দেওয়ার প্রবণতা এই উৎসবে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছবে। শহরের বাসিন্দারা ১.৮৫ লাখ কোটি টাকা খরচ করতে পারেন।
কোন কোন পণ্যের বিক্রি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছবে?
দীপাবলিতে সোনা, রুপোর গয়না, বাসনপত্র, রান্নার সামগ্রী, গাড়ি, পোশাক, বৈদ্যুতিন সামগ্রী, মোবাইল ফোন সবথেকে বেশি কেনাকাটা করেছেন বলে আশাবাদী CAIT। সোনা বিক্রির পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার কোটিতে পৌঁছতে পারে এবং রুপো বিক্রি ২৫০০ কোটিতে পৌঁছবে বলেও আশাবাদী CAIT-এর সদস্যরা।