পাঁচই জুন থেকে পাঁচই অগাস্ট। ব্যবধান মাত্র দু মাসের। সরকার বিরোধী আন্দোলনের ধাক্কায় বাংলাদেশে পতন হল শেখ হাসিনা সরকারের। সোমবার দুপুরে ইস্তফা দিয়ে আপাতত ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। দিল্লি থেকে তিনি কোথায় যাবেন, সেই ব্যাপারে রাত পর্যন্ত ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন হাসিনা। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এমনকী, বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। কূটনৈতিক মহলের দাবি, ঢাকার দিকে নজর রেখে পরবর্তী কৌশল ঠিক কী হওয়া উচিত, সেই ব্যাপারে দিল্লি কার্যত সলতে পাকানো শুরু করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দিল্লিকে সতর্ক ভাবে পা ফেলার পরার্মশ দিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন সেনা প্রধান জেনারেল শঙ্কর রায়চৌধুরী।
রবিবারই পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন তাঁর মা শেখ হাসিনা। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করেছেন হাসিনা-পুত্র সাজিব ওয়াজিদ জয়। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার দাবি, তাঁর মা হয়তো আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। কারণ, এত পরিশ্রমের পরেও যে ভাবে হাসিনার বিরুদ্ধে চক্রান্ত হল, তাতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হতাশ এবং বীতশ্রদ্ধ।
আগামী আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশে গঠন হতে চলেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ঢাকায় এমনটাই জানিয়েছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ-জামান। একইসঙ্গে তাঁর আহ্বাণ, হিংসার পথ ছেড়ে শান্তি বজায় রাখতে হবে আন্দোলনকারীদের। কিন্তু সেনা প্রধানের অনুরোধ কার্যত অনুরোধ হিসাবেই রয়ে গিয়েছে। এদিনও দেশের নানা জায়গা থেকে হিংসার রাত পর্যন্ত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গণভবন এবং ধানমুন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবনে হামলার অভিযোগ উঠেছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে।
এই পরিস্থিতিতে দিল্লির কৌশল কী হবে, সেই দিকেই তাকিয়ে কূটনৈতিক মহল। রাত পর্যন্ত যা খবর, তাতে হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের নির্যাস প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে জানাবেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডোভাল। তবে, এই পরিস্থিতিতে মোদী-হাসিনা বৈঠক হবে না কীনা, তা এখনও স্পষ্ট করেনি দিল্লি। স্পষ্ট করা হয়নি বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভবিষ্যতের ঠিকানার কথাও।