৫ বছর আগে ভারতীয় রেলের মুকুটে যুক্ত হয়েছে নতুন একটি পালক। তার মূল কারণ হল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্টে অত্যন্ত আরামদায়কভাবে যাত্রার জন্য রেলযাত্রীদের পছন্দের ট্রেন হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে এই ট্রেনটি। এবার আরও স্বচ্ছন্দভাবে যাত্রা করা যাবে বন্দেভারতে। কারণ চেন্নাইয়ের ইন্টেগ্রাল কোচ ফ্যাক্টারিতে তৈরি হয়ে গিয়েছে স্লিপার ক্লাস বন্দে-ভারত এক্সপ্রেস। যা একপ্রকার বিমানের সমগোত্রীয়। এমনটাই দাবি রেল কর্তাদের।
বন্দেভারতের ইতিহাস
২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সর্বপ্রথম বন্দেভারত এক্সপ্রেস চালু হয়। নতুন দিল্লি থেকে বারাণসী পর্যন্ত ওই ট্রেনটি ৭৫৭ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে মাত্র ৮ ঘণ্টায়। তার সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিমি। তবে গড়ে প্রতি ঘণ্টায় ৯৫ কিমি বেগে দৌড়ায় ট্রেনটি। নতুন দিল্লি- বারাণসী বন্দেভারত এক্সপ্রেস চালু হওয়ার পর ধাপে ধাপে প্রতিটি রাজ্যের রাজধানী থেকে বিভিন্ন শহরে চালু করা হয়েছে বন্দেভারত।
বর্তমানে কটি বন্দেভারত চলে?
২০১৯ সাল থেকে শুরু করে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৬১টি বন্দেভারত ট্রেন চালু করা হয়েছে। রেল সূত্রে খবর, চাহিদা অনুযায়ী আগামী দিনে আরও কয়েকটি বন্দেভারত চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বন্দেভারতে বিশেষত কী?
আরামদায়কভাবে যাত্রা করার জন্য এই ট্রেনটি এখন রেলযাত্রীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। কারণ ১০ ঘণ্টারও কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনো সম্ভব। এখনও পর্যন্ত চালু হওয়া বন্দে ভারতগুলির মধ্যে সবথেকে বেশি সময় লাগে টাটানগর-ব্রহ্মপুর বন্দেভারত এক্সপ্রেসের। এই ট্রেনটি গন্তব্যে পৌঁছতে সময় নেয় ৯ ঘণ্টা ৫ মিনিট। ফলে কম সময়ে অনেক দূরের গন্তব্যে পৌঁছনো এবং অত্যাধুনিক পরিষেবার জন্যও এই ট্রেনটিতে চড়তে পছন্দ করেন অনেকেই।
নতুন ব্যবস্থা-
চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টারিতে নতুন বন্দেভারতের যে কোচ তৈরি হচ্ছে সেটি স্লিপার কোচের। অর্থাৎ এবার থেকে আর শুধু বসে নয়, শুয়ে শুয়ে যাত্রা করা যাবে প্রিমিয়াম ক্লাস এই ট্রেনে। কীকী সুবিধা থাকবে নয়া কোচে?
কোচের ব্যবস্থা-
AC 3, AC-2 টিয়ারের পাশাপাশি ফার্স্ট AC-র ব্যবস্থা থাকছে নয়া এই কোচে। অন্য সব ট্রেনের মতোই বার্থ পজিশন থাকবে। প্রথম শ্রেণির আপার বার্থে ওঠার জন্য অত্যাধুনিক স্টিলের সিড়ি রাখা হয়েছে।
বিমানের মতো প্রতিটি বার্থের সঙ্গে রিডিং লাইট দেওয়া হয়েছে। থাকছে টু-পিন সকেট, USB চার্জিং পোর্ট, টাইপ সি চার্জিং পোর্ট। এছাড়াও অত্যাধুনিক স্ন্যাক্স বোর্ড এবং বোতল হোল্ডার দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত লাগেজ স্পেস দেওয়া হয়েছে বন্দেভারতের স্লিপার কোচে। এছাড়াও আপার বার্থে অতিরিক্ত জায়গা দেওয়া হয়েছে। ফলে যে সব যাত্রী আপার বার্থে থাকবেন তাঁরা নিজেদের লাগেজ রাখার জন্য অতিরিক্ত জায়গা পাবেন।
স্লিপার ক্লাস বন্দেভারতের বাথরুমে বেশ কিছু অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া হয়েছে। বিমানের মতো ভ্যাকুয়াম প্যান থাকছে। এছাড়াও হট ওয়াটার শাওয়ারের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ফলে ট্রেনের ভিতরেই গরম জলে স্নান করতে পারবেন যাত্রীরা।
কবে থেকে স্লিপার ক্লাস বন্দেভারত চালু হবে?
চেন্নাইয়ের ICF-এ তৈরি করা হলেও এখনও কবে থেকে ওই কোচের ব্যবহার করা হবে সেই বিষয়ে রেলের তরফে জানানো হয়নি। তবে মনে করা হচ্ছে, অতি দ্রুত ওই কোচের সুবিধা পাবেন যাত্রীরা।