Couple's Privacy: বিয়ে হয়েছে বলেই গোপনীয়তা লাটে? স্বামী-স্ত্রীকে দুজনের সবটুকু জানতেই হবে? কী বলছে আইন?

Updated : Nov 11, 2024 08:47
|
Editorji News Desk

  "আমি আর আমার সোয়ামী তো একটি মানুষ লয় , আলেদা মানুষ। খুবই আপন মানুষ, জানের মানুষ , কিন্তুক আলেদা মানুষ ।”

হাসান আজিজুল হকের বিখ্যাত উপন্যাস 'আগুনপাখি'-থেকে কয়েকটা লাইন তুললাম। 'আমি আর আমার সোয়ামী তো একটি মানুষ লয়, আলেদা মানুষ'। এই যে, দাম্পত্যে থাকে দুজন স্বামী-স্ত্রী, এবং দুজনে একটা সম্পর্কে থাকলেও এক মানুষ নয়, দুজন আলাদা মানুষ, দুজনের সত্ত্বা আলাদা, এটা মেনে নেওয়ার মতো পরিণত, আমাদের দেশ হয়েছে? দেশ বলতে, এই দেশের মানুষ, এই সমাজের কথা বলছি। উত্তরটা বোধহয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে 'না'। তাই সম্প্রতি, নতুন করে আদালতকে মনে করাতে হয়েছে সেই কথা। 

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। দাম্পত্যে থাকলেও সেই অধিকার খর্ব করা যায়না, মনে করিয়ে দিল মাদ্রাস হাইকোর্ট। মাদুরাইয়ের এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীয়ের বিরুদ্ধে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ এনে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন। প্রমাণ হিসেবে আদালতে জমা দিয়েছিলেন স্ত্রীয়ের ফোনের কল রেকর্ড। সেই প্রসঙ্গেই বিচারপতি জি আর স্বামীনাথন জানান, স্ত্রীয়ের সম্মতি ছাড়া এবং তাঁকে না জানিয়ে তাঁর কল রেকর্ড আদালত প্রমাণ হিসেবে গণ্য করবে না। কারণ, সেক্ষেত্রে স্ত্রীয়ের গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করা হবে। 

ওই মামলায়, আদালত আবারও মনে করিয়ে দিলো, বিয়ের মতো প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্কের ভিত্তিই বিশ্বাস। সেই সম্পর্কে থেকে এক জন আরেক জনের অজ্ঞাতে এবং অসম্মতিতে তাঁর কল রেকর্ড তালিকা বের করার অর্থ, সম্পর্কে বিশ্বাস নেই, এবং যিনি কল রেকর্ডের তালিকা বের করছেন, তিনি তাঁর সঙ্গীর গোপনীয়তার অধিকারে হস্তক্ষেপ করেছেন।  

গোপনীয়তা কবে থেকে ভারতীয় সংবিধানে মৌলিক অধিকারের আওতায় এল?

২০১৭ সালে, কেন্দ্র বনাম বিচারপতি কে এস পুত্তাস্বামী মামলায় দেশের শীর্ষ আদালত, একটি নজির বিহীন রায় দেয়। ২০১৪ সালে, ফেসবুক যখন হোয়াটসআপ অধিগ্রহণ করে, তখন প্রশ্ন ওঠে, হোয়াটসঅ্যাপের ডেটা শেয়ারিং পলিসির ফলে ব্যক্তির গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা হবে না তো?

 গোপনীয়তা, ব্যক্তির মৌলিক অধিকার কিনা সেই সংক্রান্ত মামলার বিচারে  নয় বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করা হয়েছিল। মামলায় কেন্দ্রের প্রতিনিধিত্ব করেন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে ভেনুগোপাল যিনি গোপনীয়তার অধিকারকে মৌলিক অধিকার করার বিপক্ষে ছিলেন। 

২৪ অগাস্ট, ২০১৭য় সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১ (স্বাধীনতার অধিকার) অনুসারে গোপনীয়তার অধিকার একটি মৌলিক অধিকার এবং কেড়ে নেওয়া যাবে না। 

২০১৮ সালে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে ফৌজদারি অপরাধ-এর তালিকা থেকে বাদ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারাকে  অসংবিধানিক ঘোষণা করেছিল শীর্ষ আদালত। ধারায় বলা ছিল, কোনও ব্যক্তি কোনও বিবাহিত মহিলার সঙ্গে তাঁর স্বামীর অনুমতি ছাড়া সম্পর্ক স্থাপন করলে ওই মহিলার পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানা উভয়ই হতে পারে। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, ব্রিটিশদের তৈরি করা এই আইন সেকেলে, একতরফা ও বৈষম্যমূলক। এই আইন মহিলাদের মর্যাদাকে খর্ব করে। কিন্তু ২০২৩ সালের শেষে ফের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে ফৌজদারি অপরাধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির রিপোর্টে। কিন্তু শেষমেশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুসারে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়নি।  

Marriage

Recommended For You

editorji | ভারত

One Nation One Vote : কেমন হবে ভোট দানের চরিত্র, সিদ্ধান্ত এবার JPC-র কোর্টে

editorji | ভারত

ABHA Card: স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে এবার বিশেষ অ্যাকাউন্ট, লিঙ্ক করতে হবে আধার

editorji | ভারত

Fake International Call: আন্তর্জাতিক নম্বর থেকে ভুয়ো কল! হোয়াটসঅ্যাপে স্প্যাম থেকে বাঁচতে কী করবেন

editorji | ভারত

Abhishek Banerjee : নেত্রী মমতাকে ইন্ডিয়া জোটে চান অভিষেক, নির্বাচন নিয়ে কটাক্ষ কেন্দ্রকে

editorji | ভারত

Ustad Zakir Hussain : প্রয়াত উস্তাদ জাকির হুসেন, বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর