আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় এবার রাজ্যের কোর্টেই বল ঠেলল কেন্দ্র। শুক্রবার এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জগৎপ্রকাশ নাড্ডা জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর চিকিৎসকরা তাঁকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন। কিন্তু এই ব্যাপারে যা করণীয়, তা রাজ্যকেই করতে হবে। আরজি কর আন্দোলন নিয়ে এদিন কার্যত তাঁদের আন্দোলন আংশিক ভাবে প্রত্যাহার করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আর সেই দিন এই হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিবৃতিকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলেই দাবি করছে রাজনৈতিক মহল।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, দল হিসাবে এই আন্দোলনে অনেকটাই পিছিয়ে বিজেপি। কারণ, পদ্ম নেতারা একদিনের জন্যও এই আন্দোলনে জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে ঘেঁষতে পারেননি। উল্টে তাদের এক সাংসদ এবং এক বিধায়ককে গো ব্যাক স্লোগান শুনতে হয়েছে। আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুর প্রতিবাদের নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। অরাজনৈতিক এই মঞ্চের পিছনে যে বিজেপি নেতাদের মগজই কাজ করেছিল, বঙ্গ রাজনীতিতে তা আর অজানা নয়।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, হাসপাতালের মধ্যে থাকা দুর্নীতি ফাঁস হওয়ার পরেও তা কাজে লাগাতে পারেননি সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীর মতো বঙ্গ বিজেপি নেতারা। হাসপাতালের এই ঘটনা নিয়ে খুব বেশি প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বিজেপিতে আদি বলে পরিচিত দিলীপ ঘোষকে।
আরজি কর আবহে মনে করা হয়েছিল বাংলার সংগঠনের দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হবে দিলীপ ঘোষকে। কিন্তু তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ত্রিপুরায়। যদিও রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঠারেঠোরে শাসক তৃণমূলের দিকেই আঙুল তুলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডা। তিনি জানিয়েছেন, কীভাবে হাসপাতাল চলতো এবং কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে এখন রিপোর্ট আসছে। রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু রাজনৈতিক মহল মনে করে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসাবে জেপি নাড্ডার এই বিবৃতি অনেক দেরিতে এসেছে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে মধ্যপ্রদেশে ব্যাপম কেলেঙ্কারি নাড়িয়ে দিয়েছিল বিজেপির ভিত। তাই হয়তো আরজি করের ঘটনায় সতর্ক ভাবে পা ফেলতে চেয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। উল্টোদিকে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাদের দাপটে এই আন্দোলন থেকে কার্যত হারিয়ে যেতে হয়েছে বিজেপি। আর সেই কারণে, জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি অসম্মান জনক শব্দ ব্যবহার করতে হয়েছে খোদ শুভেন্দু অধিকারীকে।
তবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসাবে নাড্ডা স্বীকার করেছেন, দেশের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকরা সত্যিই চাপে রয়েছে। এই ব্যাপারে রাজ্যগুলি চাইলে কেন্দ্র তাদের সব সাহায্য করবে। তবে ডাক্তারদের নিরাপত্তার দায়িত্ব রাজ্যকেই নিতে হবে।