চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তা কর্মীদের দিয়ে পর্যাপ্ত সুরক্ষা মোতায়েন সম্ভব নয়। এই নিয়ে আগেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার আরজি কর মামলার শুনানিতে রাজ্যের হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা নিয়ে একই উদ্বেগ সুপ্রিম কোর্টেও। সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে নিরাপত্তা মোতায়েন নিয়ে সওয়াল চিকিৎসকদের আইনজীবী করুণা নন্দী ও ইন্দিরা জয় সিংয়ের। শীর্ষ আদালতে তাঁদের প্রস্তাব, বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তা কর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের সাহায্যে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সুরক্ষার বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না। হাসপাতালগুলিতে রাজ্য পুলিশ মোতায়েন করা হোক।
আরজি করে কর্তব্যরত তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার হয় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। তাই সিভিক পুলিশের উপর কোনও পক্ষই আস্থা রাখতে চাইছে না। এই ঘটনার পর জুনিয়র চিকিৎসকরাও যে দাবি করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম ছিল হাসপাতালে যথাযথ নিরাপত্তা। গত ৯ সেপ্টেম্বর শীর্ষ আদালত তাঁদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিলও এই নিরাপত্তার কারণ দেখিয়েই তা কার্যকর হয়নি। মঙ্গলবার শুনানিতে এই প্রসঙ্গ উঠতেই প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানতে চায়, জুনিয়র ডাক্তারদের নিরাপত্তায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, বেসরকারি সংস্থা থেকে সিভিক ভলান্টিয়ার এনে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তাঁরাই হাসপাতালের নিরাপত্তায় থাকবেন।
এরপরই প্রবল আপত্তি জানান ডাক্তারদের আইনজীবী করুণা নন্দী ও ইন্দিরা জয় সিং। তাঁদের দাবি, সরকারি হাসপাতালগুলিতে ১৫১৪ সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের নিরাপত্তায় মোটেই স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন না জুনিয়র ডাক্তার, নার্স বা অন্য মহিলা কর্মীরা। তাই সিভিক পুলিশকে সরিয়ে রাজ্য পুলিশকে নিয়োগ করার আবেদন করছেন তাঁরা। এরপরই প্রধান বিচারপতি রাজ্যের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কপিল সিব্বল জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। নজরদারির জন্য সিসি ক্যামেরার সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
রাজ্যের উত্তর শুনে অসন্তুষ্ট প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। চিকিৎসকদের আইনজীবীর প্রস্তাব মতো রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তার পক্ষেই সওয়াল করেন প্রধান বিচারপতি। এছাড়া নিরাপত্তা নিয়ে একটা কমিটি গঠন করারও নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি। ২ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের সব হাসপাতালে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা লাগানোর কথাও বলা হয়েছে।