কেন্দ্রে তৃতীয় মোদী সরকারের ১০০ দিনের মাথায় পাওয়া গিয়েছিল ইঙ্গিত। ইঙ্গিত দিয়েছিলেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশে এক দেশ এক ভোটের দিকে একধাপ এগিয়ে গেল মোদী সরকার। আজ, বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাস হয়ে গেল প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের এই ইস্যুতে সুপারিশ। কেন্দ্র জানিয়েছে, আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে তা বিল আকারে পেশ করা হবে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে গণতন্ত্র-বিরোধী পদক্ষেপ বলেই অভিযোগ করল তৃণমূল কংগ্রেস।
৩৭০ ধারা বিলুপ্তির পরেই আজ, বুধবার প্রথম ভোট হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরে। সেইদিনেই আরও এক বড় পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল মোদী সরকার। গত বছরের পয়লা সেপ্টেম্বর এক দেশ, এক ভোট নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল একটি কমিটি। যার মাথায় রাখা হয়েছিল দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে। গত লোকসভা ভোটের আগে ১৪ মার্চ, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে ১৮ হাজার পাতার রিপোর্ট জমা দিয়েছিল কোবিন্দ কমিটি। যেখানে একইসঙ্গে লোকসভা ভোটের সঙ্গেই সবকটি রাজ্যের বিধানসভার ভোট একসঙ্গে করার সুপারিশ করা হয়েছিল।
এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভা কোবিন্দ কমিটির সুপারিশকে মান্যতা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে সংসদে আসন্ন শীত অধিবেশনে এই পদক্ষেপকে বিলের আকারে পেশ করতে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের পরেই সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন জানিয়েছেন, এক দেশ এক ভোট আসলে বিজেপির আর একটি গণতন্ত্রবিরোধী পদক্ষেপ।
গোড়া থেকেই কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব কংগ্রেস-তৃণমূল-সহ বাকি বিরোধী দলগুলি। বিরোধীদের মতে, এই নীতি নিয়ে মোদী সরকার ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতান্ত্রিক ভাবনার পরিপন্থী বলেও বিরোধীদের অভিযোগ।
গত লোকসভা ভোটে ৪০০ আসন জয়ের আশা নিয়ে মাঠে নেমেছিল বিজেপি। কিন্তু তার অনেক আগেই এবার থমকে যেতে হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি। সংযুক্ত জনতা দল এবং তেলুগু দেশম পার্টির খুঁটির উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে এবারের এনডিএ সরকার। গত লোকসভা ভোটের আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ইঙ্গিত ছিল, এক দেশ, এক ভোট কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর তাঁর সরকার।
প্রশ্ন হল, সরকারের এই নীতিতে চাপে পড়তে পারে বিরোধীরা। এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের। বিরোধীদের একাংশের আশঙ্কা, পরবর্তী পর্যায়ে এই নীতিতে হেঁটে রাজ্য নির্বাচন কমিশনগুলিকে কার্যত ক্ষমতাহীন করে দিয়ে পঞ্চায়েত-পুরসভা ভোটকেও এই প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হবে।