মাইলের পর মাইল বরফে ঢাকা বিস্তীর্ণ অঞ্চল। কেউ কোত্থাও নেই৷ তার মাঝেই কিছু অতিকায় পায়ের ছাপ। একটির পর একটি। প্রায় সাড়ে সাত ইঞ্চি লম্বা ও সাড়ে ছয় ইঞ্চি চওড়া। এত বড় পা কি কোনও প্রাণীর হয়? তাহলে কি হিমালয়ের গহীন অঞ্চলে সত্যিই আছে তুষারমানব ইয়েতির অস্তিত্ব? যুগের পর যুগ যে প্রাণীর কল্পনা করে এসেছে মানুষ, তা কি মিথ্যা নয়? সত্যি? কয়েকজন বাঙালি পর্বতারোহীর সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা নতুন করে উস্কে দিয়েছে সেই প্রশ্ন।
হাওড়া ডিস্ট্রিক্ট মাউন্টেনার্স এন্ড ট্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশন’ ও ‘হিমালয়ান অ্যাসোসিয়েশন’-এর যৌথ উদ্যোগে হিমাচলপ্রদেশের ইন্দ্রাসন শৃঙ্গ (৬২২১ মিটার) ও পড়শি দেওটিব্বা (৬০০১ মিটার) শৃঙ্গ অভিযানে গিয়েছিল একদল বাঙালি পর্বতারোহী। এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন এভারেস্টজয়ী মলয় মুখোপাধ্যায় এবং দেবাশিস বিশ্বাসের মতো নামজাদা পর্বতারোহীরা। গত ১৫ জুন সকালে মলয়-সহ ৯ জন দেওটিব্বার শীর্ষে পৌঁছন। তারপর রওনা দেন দেবাশিসরা। অদ্ভুত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন তাঁরা।
দেবাশিস জানিয়েছেন, দেওটিব্বা অভিযানের সময় ক্যাম্প ওয়ান থেকে ক্যাম্প টু-তে যাওয়ার সময় তাঁরা বরফের উপর অতিকায় এবং অদ্ভুত কিছু পায়ের ছাপ দেখতে পান। প্রায় সাড়ে সাত ইঞ্চি লম্বা ও সাড়ে ছয় ইঞ্চি চওড়া সেই পায়ের ছাপ মানুষের অভিজ্ঞতার মধ্যে থাকা কোনও প্রাণীর হতে পারে না। শেরপারা পর্বতারোহীদের জিজ্ঞেস করেন, এটি কীসের পায়ের ছাপ? দেবাশিসরা তাঁদের বলেন, এটি ভল্লুকের পদচিহ্ন। কিন্তু শেরপারা সে কথা বিশ্বাস করেননি। তাঁদের দৃঢ় বিশ্বাস, এই পায়ের ছাপ ইয়েতির।
দেওটিব্বা এবং ইন্দ্রাসন আরোহন সেরে ফেরার সময় তুষারপাতের কারণে আর ওই পায়ের ছাপ দেখা যায়নি। কিন্তু তার আগেই ভিডিও তুলে নিয়েছিলেন পর্বতারোহীরা। স্থানীয়দের সেই ভিডিও দেখালে তাঁরা জানান, এই পদচিহ্নের সঙ্গে ভালুকের পায়ের ছাপের মিল নেই।
এল ডোরাডো, ইয়েতি, মৎসকন্যা- এসব কি সত্যি? মানুষের অভিজ্ঞতার বাইরে কি এখনও রয়ে গিয়েছে বহু কিছু? সংশয় তৈরি করছে বাঙালি পর্বতারোহীদের অভিজ্ঞতা।