জটিল জীবন, মানসিক অবসাদ, ক্লান্তি...এই প্রতিটা শব্দ আমার আপনার জীবনের রোজকার সঙ্গী। তবে এদের সঙ্গী করতে কেউ চায় না। সুন্দর-সুস্থ মনের জন্য দরকার একটু যত্ন। না, অন্য কারোর যত্ন নয়, নিজের যত্ন। একটি শব্দ এখন খুব শোনা যায়, সেলফ কেয়ার। সেলফ কেয়ারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে দিস্তে দিস্তে আর্টিকল লেখা হয়ে গিয়েছে, আপনি পড়েও ফেলেছেন, তবুও নিজের যত্ন নেওয়ার বেলায়, সেই গরিমসি।
যারা নিজেদের যত্ন, কীভাবে নেওয়া শুরু করবেন, জানেন না, তাঁদের বলি, সেলফ কেয়ার অনেকটাই আপনার ইচ্ছে মতো, পছন্দের কাজ করলে নেওয়া হয়, সে কথা ভুল নয়। কিন্তু সেলফ কেয়ারের কিছু বেসিক শর্ত রয়েছে। কয়েকটি করণীয় একেবারে বাধ্যতামূলক। আজ সেরকমই খান পাঁচেক বাধ্যতামূলক পদক্ষেপের কথা বলা যাক।
শরীরচর্চা
শরীরচর্চা করলে, মন ভাল থাকে, শরীর সতেজ থাকে, আমি-আপনি জানি। কিন্তু, তারপরেও বাদ পড়ে। যে কোনও ধরণের শরীরচর্চা, যেটা আপনার পছন্দের, নাচ হয়তে পারে, সাঁতার হতে পারে, হতে পারে সাইক্লিং বা বিকেলে হাঁটতে বেরনো, এটা নিয়মিত করতেই হবে।
কথা বলা
জীবনে অনেক রকমের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি আসে, আমরা উলটো দিকের মানুষকে কিছু প্রশ্ন করতে ভয় পাই, সহজ হয়তে পারি না। সেই প্রশ্ন শুরুরতেই করতে হবে, তাহলে ভবিষ্যতে জটিলতা কম হবে। প্রশ্ন করলে সাময়িক সমস্যা হতে পারে জেনেই, প্রশ্ন করতে হবে, যে কোনও সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখার জন্য কথা বলা খুব দরকার। কথা না বলতে বলতে কথা ফুরিয়ে আসে, যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক।
নিজেকে ফেস করুন
অন্য কাউকে ফেস করার আগে নিজেকে ফেস করুন, আপনার নিজের কাছে নিজের ভুল, হেরে যাওয়া, আপনার ভয়, আশঙ্কা সবকিছু স্বীকার করুন। আমরা অধিকাংশ মানুষ নিজেকে চিনতে পারি না। কারণ, নিজের সঙ্গে সময় কাটানো, নিজেকে অস্বস্তিকর প্রশ্নগুলো না করতে পারলে পাহাড় ডিঙ্গোনো যায় না।
যে কাজে ভয়, সে কাজেই জয়
পছন্দের কাজ করুন, সেই সুযোগ পেলে আমাদের মন স্বাভাবিক ভাবেই ভাল হবে, কিন্তু মন খারাপের সময়ে যা ফেস করতে ভয় পাচ্ছেন, হয়তো কর্মক্ষেত্রে যেতে, কিছুদিনের বিরতি নিয়ে আবার ফিরুন, ওই পরিস্থিতি থেকে মুখ ঘুরিয়ে থাকবে না। ভেতরে চ্যালেঞ্জ অ্যাকসেপ্ট করলে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভাল থাকা সহজ হয়।
স্নান করুন
হ্যাঁ, ঠিক শুনছেন, সময় নিয়ে ভাল করে স্নান করুন। ভাবছেন এ কেমন কথা? কিন্তু অবসাদে থাকলে, মন খারাপ থাকলে আমরা রোজকার কিছু কাজে সময় কমিয়ে দিই, হয়তো তাড়াহুড়ো করে কোনওরকমে গায়ে জল দিলাম, বা ওয়েট টিস্যু দিয়ে মুছে কাজ চালিয়ে নিলাম। এসবে মন আরও বিষণ্ণ হয়ে উঠতে পারে। তাই মন খারাপ বাড়লে, খুব কঠিন কিছু করার দরকার নেই। একটু সময় বার করে, ভাল করে স্নান করুন, একটু হলেও সতেজ লাগবে।
মন ভাল করতে, আমরা অনেক সময়ই এমন কাজ করে থাকি, যাতে তাৎক্ষণিক ভাল লাগে। যেমন শপিং করা, বা নিজেকে কোনও একটা ভাল ক্যাফেতে ট্রিট দেওয়া বা...পার্লারে গিয়ে খানিকক্ষণ সময় কাটানো, এসব কখনই ভুল নয়, তবে এটাও মনে রাখা দরকার, সাময়িক ভাল থাকা কিন্তু মন ভাল রাখার পাসোয়ার্ড নয়।