সিনেমা, সাহিত্য, কবিতা, গানে বারংবার স্বমহিমায় ছুটে বেরিয়েছে কলকাতার এই হলুদ ট্যাক্সি। ট্যাক্সি চালিয়েই একদিন চাঁপার জন্য বিয়ের প্রস্তাব এনেছিলেন অমিয়, বাঙালির মনে মৌচাকের এই দৃশ্য এখনও রঙিন। তেমনই রঙিন পরশপাথরের তুলসী চক্রবর্তীর ট্যাক্সি সফর। ‘৩৬ চৌরঙ্গী লেন’ ছবিতেও দেবশ্রী-ধৃতিমানের প্রেম এই ট্যাক্সিতেই। কিংবা বছর কয়েক আগের ‘প্রাক্তন’ ছবিতেও, প্রসেনজিৎ ঋতুপর্ণা কলকাতা ঘুরেছেন কখনও হলুদ ট্যাক্সিতে, কখনও বা ট্রামে। হালফিলের দিলজিৎও তিলোত্তমা চষেছেন হলুদ ট্যাক্সি চেপেই। অভিজ্ঞতার ভারে বৃদ্ধ এই ট্যাক্সির গুরুত্ব, গ্রহণযোগ্যতা কমলেও, কমেনি নস্টাল জিয়ার ঝাঁঝ। এক সময় তিলোত্তমার প্রেমের জায়গা ছিল এই ট্যাক্সি। কালের নিয়মে তা হারিয়ে গেলে কী করবেন শহরবাসী?
কথায় আছে, শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে! তাই এই শহরবাসীর হলুদ ট্যাক্সির উপর ভালবাসা যেমন আছে, তেমন অভিযোগও রয়েছে ভুরি ভুরি। কলকাতার ট্যাক্সির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ একটা সময় ছিল মিটারে কারচুপির। পরবর্তী সময়ে ডিজিটাল মিটার করে এই সমস্যার সমাধান করেছিল রাজ্য সরকার। তারপরেও রয়েই গিয়েছে অভিযোগ। পরিষেবায় গতি আনতে কলকাতার ট্যাক্সিতে সাঁটা হয়েছিল ‘নো রিফিউজাল’ তকমা। তাতেও যাত্রীদের ক্ষোভ, মুখ ঝামটার সঙ্গেই শুনতে হয়েছে ‘যাব না’
‘আমি ট্যাক্সি’ । অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত মৌচাক সিনেমায় রবি ঘোষের গলায় এই সংলাপ এখনও বাঙালির মুখে মুখে ফেরে। সময় যত গড়িয়েছে কলকাতার ট্যাক্সি প্রেম বেড়েছে লং ড্রাইভের গতিতে। সেই পথ এবার যেন সত্যিই শেষ হতে চলেছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই কলকাতা শহর থেকে প্রায় ৬ দশক পর অবসর নিতে চলেছে কলকাতার এম্বাসেডর ট্যাক্সি।