পুরী সমুদ্রসৈকত ও জগন্নাথ দেবের মন্দির। বাঙালির পর্যটনের অন্যতম ডেস্টিনেশন ওড়িশার উপকূল। সেই জগন্নাথ মন্দিরের আদলে দীঘার সমুদ্রসৈকতে তৈরি হচ্ছে জগন্নাথ মন্দির। কাজ প্রায় শেষের পথে। পুরীর মন্দিরের মতো সব সুবিধাই থাকবে এখানে। বাংলার জগন্নাথ মন্দিরে কিন্তু পুরীর মতো খাজা পাওয়া যাবে না। এখানে প্রধান প্রসাদ হবে বাংলার ক্ষীরের গজা। শুধু গজা নয়, কালীঘাটের মতো প্যারা, গুঁজিয়াও প্রসাদ হিসেবে থাকবে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরে। অক্ষয়তৃতীয়ার দিন উদ্বোধন হবে এই মন্দির।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের থেকে এই মন্দির অনেক বড় এলাকায় তৈরি হচ্ছে। ২০ একর জমিতে তৈরি হচ্ছে এই জগন্নাথ মন্দির। এই মন্দির তৈরির জন্য খরচ হয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার মার্বেলের মূর্তিও তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি, মন্দিরের মধ্যেই বিমলা দেবীর মন্দির ও রাধাকৃষ্ণের মন্দিরও থাকবে। তবে নিমকাঠ অর্থাৎ দারুব্রহ্মে তৈরি হচ্ছে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের বিগ্রহ। এই বিগ্রহ তৈরি করছে ইস্কন। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সব নিয়ম মেনেই এখানে পুজো পাবেন জগন্নাথদেব। পুরীর মন্দিরের মতো থাকবে স্বর্গদ্বার। মূল প্রবেশে শ্রীচৈতন্য়ের গরুড় স্তম্ভও রাখা হবে। যার নাম দেওয়া হয়েছে চৈতন্য়দ্বার। পুরীর মন্দিরের মতো দিঘার মন্দিরেও থাকবে ধ্বজা। পুরীর মন্দিরের ধ্বজা রোজ পাল্টাতে হয়। এই ধ্বজা যারা পাল্টান, তাদের বলা হয় দ্বৈতাপতি। বংশানুক্রমে এই দায়িত্ব পান দ্বৈতাপতিরা। পুরীর মন্দিরের সঙ্গে কথা বলে দিঘার মন্দিরের ধ্বজা পরিবর্তনে কিছু দ্বৈতপতিকে আমন্ত্রণ করবে রাজ্য। তাঁরাই স্থায়ীভাবে এর দায়িত্ব পাবেন। জগন্নাথ মন্দিরের ভোগের ঘর সব সময়ই আলাদা গুরুত্ব থাকে। পুরীর মন্দিরে রোজ ৫৬ ভোগ নিবেদন করা হয়। এখানেও থাকবে ভোগঘর। যেখানে রোজ মন্দিরের ভোগ রান্না হবে। এছাড়াও থাকবে স্টোররুম, রেস্টরুম। পুজো দেওয়ার জন্য আলাদা করে ডালা ঘরও তৈরি হয়েছে।
দিঘার এই মন্দিরে এই বছর প্রথম রথযাত্রা। রথযাত্রার আগে মন্দিরের সব নিরাপত্তা, বাকি সব সিস্টেম সাজানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডে জেলা পরিষদ, আমলাদের রাখা হয়েছে। থাকছে ইস্কনের চার সদস্য ও সনাতনী ট্রাস্টের ৫ সদস্য। রথযাত্রায় পুরীতে যা যা নিয়ম মানা হয়, এখানেও একই নিয়ম হবে। জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার সঙ্গে বাংলার মানুষের ধর্মীয় আবেগ জড়িয়ে। দিঘার এই মন্দির ঘিরে তাই পর্যটন ব্যবসাও বেড়ে উঠবে বলে আশাবাদী রাজ্য সরকার।