শুক্রবার ভোরে রুদ্ধশ্বাস ঘটনার সাক্ষী হলেন কালিঘাট ১৪নং ভট্টাচার্য লেনের বাসিন্দারা। পাড়ার এক বাড়িতে চুরি করতে এসে ধরা পড়ল চোর। ততক্ষণে তার ছুরির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন পরিবারের দুই সদস্য। কিন্তু তারপরেও চোরকে ধরে ফেলেন বাড়ির মহিলা সদস্যরা।
জানা গিয়েছে, রথযাত্রার ভোরে কালীঘাটের ওই এলাকায় একটি বাড়িতে ভোর পাঁচটা নাগাদ চুরির উদ্দেশ্যে এক দুষ্কতী ঢোকে। প্রথমে গৃহকর্ত্রী ভেবেছিলেন হয়তো তাঁরই বাড়ির কোনও সদস্য ঘরের মধ্যে রয়েছেন। পরে বুঝতে পারেন ঘরে চোর ঢুকেছে। চিৎকার করে চোরকে ধরার চেষ্টা করেন গৃহকর্ত্রী দীপা চক্রবর্তী। চোর যে ঘরে ঢুকেছিল সেই ঘরেই ঘুমোচ্ছিলেন দীপার ননদ রত্না চট্টোপাধ্যায়। চেঁচামেচিতে তাঁরও ঘুম ভেঙে যায়। তিনিও চোরকে ধরার চেষ্টা করেন। এর পর ছুটে আসেন পরিবারের এক পুরুষ সদস্য প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী। বেগতিক বুঝে ততক্ষণে ধারালো অস্ত্র বের করেছে চোর। তা দিয়েই সে প্রসেনজিতের গলা, মাথায়,পিঠে একাধিক কোপ মারে। ভাইকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে তাঁকে বাঁচাতে ছুটে আসেন দিদি পিঙ্কি চক্রবর্তী। তাঁকেও ধারালো অস্ত্রের আঘাত করে দুষ্কৃতী। সেই আঘাত সহ্য করেই শেষ পর্যন্ত বাড়ির মহিলারা চোরকে ধরে ফেলেন। তবে মহিলাদের এই কাজে সাহায্য করে বাড়ির পোষা কুকুর রকি। সে অভিযুক্তের পা টেনে ধরে তাকে বেকায়দায় ফেলে দেয়। পরে পুলিশের হাতে চোরকে তুলে দেওয়া হয়। আহত প্রসেনজিৎকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর মাথায় ১৮টি, পিঠে ১৪টি, গলায় ৯টি সেলাই পড়েছে।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, পিঙ্কির পিসি রত্নার ঘরেই প্রথমে চোর ঢুকেছিল। সেখানে বিগ্রহ ছিল। ঠাকুরের সোনার গয়না, নগদ টাকা চুরি করেছে অভিযুক্ত। এমনকি, ফ্রিজ থেকে আইসক্রিমও খেয়েছে। প্রথমে চুরি করে কিছু গয়না কাগজে মুড়ে সে এলাকার একটি গলিতে লুকিয়ে রেখে এসেছিল। তারপর আবার চুরি করতে ঢুকেছিল। কাগজে মোড়া সেই গয়না উদ্ধার করেন স্থানীয় এক বাসিন্দা।