শুক্রবার বন্ধ কলকাতা হাইকোর্টের সমস্ত কাজ। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রশাসনিক কাজ মোটের উপর বহাল থাকলেও, শুক্রবার থেকে পিছিয়ে গেল কলকাতা হাইকোর্টের সমস্ত মামলার শুনানি। দানা’র সিঁদুরে মেঘ দেখে শুক্রবারের সমস্ত মামলা পিছিয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী সোমবার অর্থাৎ ২৮ অক্টোবর। যদিও এই মুহূর্তে পুজোর ছুটি চলছে আদালতে, বন্ধ রয়েছে সাধারণ কার্যক্রম। তবুও শুক্রবার অবকাশকালীন তিনটি বেঞ্চে মামলা ওঠার কথা ছিল কলকাতা হাইকোর্টে। কলকাতা হাইকোর্টের মতোই, দু’দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওড়িশা হাইকোর্টও। রেজিস্ট্রারের তরফে জারি করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। সেখানে লেখা হয়, ভয়াবহ দুর্যোগের আশঙ্কা থেকে ২৪ ও ২৫ অক্টোবর হাইকোর্টের সমস্ত কাজ বন্ধ থাকবে।
দুর্যোগের কারণে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ-এর মামলা আপাতত স্থগিত থাকছে , সঙ্গে স্থগিত থাকছে দুটি একক বেঞ্চের মামলাও। এর মধ্যে একটি, শুক্রবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের জামিন মামলারও শুনানি হওয়ার কথা ছিল। বিচারপতি অজয়কুমার মুখোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চে কুন্তলের জামিন মামলার শুনানির কথা ছিল। সেটিও পিছতে হয়েছে।
এর আগে ২৩ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্যোগ কবলিত সাতটি জেলার স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে রাতভর নবান্নে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । রাতভর জায়েন্ট স্ক্রিনে চোখ রেখে দানা-র গতিপথ কোন দিকে, ঝড়ের বেগ কতটা, উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে প্রভাব কতটা পড়বে, তার উপর নজর রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী । রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রীও রাতভর বিদ্যুৎ ভবনে থাকেন ।
ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বিভিন্ন দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হয়েছে একাধিক লোকাল ট্রেন। শিয়ালদহ ডিভিশনের একাধিক লাইনের ট্রেন বাতিল করা হয়েছিল। মূলত দিঘা, তাজপুর, জুনপুট, সাগরদ্বীপ, বকখালি সহ বিভিন্ন এলাকার গ্রামগুলি পুরোপুরি খালি করে দেওয়া হয়েছিল। অস্থায়ী ত্রাণশিবির এবং সাইক্লোন সেন্টারে রাখা হয়েছিল তাঁদের। বিমান ওঠানামায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
কিন্তু যতটা গর্জাল, এখনও পর্যন্ত প্রভাবের দিক থেকে ততটা বর্ষাতে পারেনি ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বৃহস্পতিবার সারারাত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। এমনকি শুক্রবার সকাল থেকেও, হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, দুই মেদিনীপুর, দুই পরগনার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বিকাল পর্যন্ত বৃষ্টি চলবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। মেদিনীপুর, ২৪ পরগনার একাধিক এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ার খবর সামনে এসেছে। এখনও পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর থেকে বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর আসেনি।