মা হতে চেয়েছিলেন অর্পিতা। সন্তান দত্তককে কোনও আপত্তি ছিল না পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের। খুব কাছের আত্মীয় হিসাবে নো অবজেকশন সার্টিফিকেটও দিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। স্কুল সার্ভিসে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে আদালতে পেশ হওয়া চার্জশিটে এই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি। সোমবার ঘটনার ৫৮ দিনের মাথায় আদালতে ১৭২ পাতার চার্জশিট পেশ করেছিল ইডি। তাতে উল্লেখ করা হয়েছিল পার্থ ও অর্পিতার সম্পত্তির পরিমাণ ১০৩ কোটি টাকা। মঙ্গলবার সেই চার্জশিট থেকে উঠে এল এই ঘটনায় গ্রেফতার পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়ের সম্পর্কের নতুন দিক। চার্জশিটে ইডির দাবি, গত ২৩ জুলাই এসএসসি দুর্নীতির তদন্তে নেমে অর্পিতার টালিগঞ্জের ডায়মণ্ড প্লাজায় তল্লাশি চালানো হয়েছিল। সেই তল্লাশিতে একাধিত নথির সঙ্গেই উদ্ধার হয়েছিল দত্তক সংক্রান্ত কাগজপত্র। ইডির দাবি, উদ্ধার হওয়া চিঠিতে পার্থ নিজেকে ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধু বলে উল্লেখ করেছিলেন। নো অবজেকশন সার্টিফিকেটে জানিয়েছিলেন, অর্পিতা সন্তান দত্তক নিলে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। এবিষয়ে পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। জবাবে পার্থ জানান, তিনি জনপ্রতিনিধি। তাই তাঁর কাছে এধরনের শংসাপত্র নিতে আসেন অনেকে। তাই এধরনের শংসাপত্র তাঁর কাছে তৈরি থাকত। যদিও গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই পার্থ দাবি করে এসেছেন, তিনি অর্পিতাকে চিনতেন না। কিন্তু উদ্ধার নথি সে কথা মানছে না বলেই চার্জশিটে উল্লেখ করেছে ইডি।
এর পাশাপাশি, সম্পত্তি নিয়ে এতদিন ইডির জেরায় অর্পিতা যা জানিয়ে এসেছিলেন, সেই কথাও চার্জশিটে উল্লেখ করেছে ইডি। অর্থাৎ নগদ কোটি টাকা, বেনামি ফ্ল্যাট, বাগানবাড়ি, জমি এমনকী সব গয়না যে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের, তাও চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে। ইডির চার্জশিটে আরও বলা হয়েছে, অর্পিতার দাবি, তিনি নিজের আর মায়ের প্রাণের ভয়ে আগে মুখ খোলেননি। তাঁদের কাছে কোন দেশের মুদ্রা কত ছিল, তার উল্লেখও করা হয়েছে । সেই তালিকায় অর্পিতার কাছে নেপালের ১৫, থাইল্যান্ডের ১৪, মালয়েশিয়ার ১, হংকংয়ের ২, বাংলাদেশের ২, আমেরিকার ২৪ এবং সিঙ্গাপুরের ১৩৯টি মুদ্রা ছিল। তবে সবমিলিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার মোট কত টাকা উদ্ধার হয়েছে, তা স্পষ্ট করেনি ইডি।
কখনও বিমার নথিতে লেখা হয়েছে, অর্পিতার আত্মীয় পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়।
আবার কখনও সন্তান দত্তক নেওয়ার শংসাপত্রে লেখা হয়েছে, তিনি অর্পিতার পারিবারিক নিকট আত্মীয়। যদিও সেই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ইডির কাছে পালটা যুক্তি দিয়েছেন তিনি।