চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই উত্তপ্ত বাংলাদেশের পরিস্থিতি। কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে পদত্যাগ করতে হয়েছিল শেখ হাসিনাকে। এরপর মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বতী সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে এমনটা নয়। সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে পদ্মাপাড়ে। আর এর জেরে পর্যটকের সংখ্যায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। এমনটাই বক্তব্য অভিবাসন দফতরের এক আধিকারিকের।
করোনার পর থেকেই বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা পর্যটকের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। চলতি বছরে বাংলাদেশের আভ্যন্তরিন পরিস্থিতির জন্যই সেই অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। ২০১৯ সালের পর যেভাবে পর্যটকের সংখ্যা কমেছে ২০২৪ সালে সেই ধারা বজায় রয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারি হিসেব বলছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পর্যটকের সংখ্যা ২৫ লাখ ৭৭ হাজার ৭২৭ জন। তারপর ২০২০ সালে পর্যটকের সংখ্যা কমে ৫ লাখের আশপাশে ছিল। ২০২১ সালে সেই সংখ্যা কমে আড়াই লাখ হয়। তবে ২০২২ সালে পর্যটকের সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৫৭ জন। ২০২৩ সালে সেই সংখ্যা পৌঁছে যায় ২১ লাখের কিছু বেশি। কিন্তু চলতি বছরের অগাস্ট মাস পর্যন্ত বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা পৌঁছয় প্রায় ১৩ লাখ।
সেপ্টেম্বর মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত পর্যটকের সংখ্যা মেলেনি। তবে অভিবাসন দফতরের এক কর্তা বাংলা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বর্তমানে যা পরিস্থিতি তাতে বছর শেষে পর্যটকের সংখ্যা ১৫ লাখে পৌঁছতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মত, প্রতিমাসে দেড় লাখ থেকে দু লাখ বাংলাদেশি আসেন ভারতে। জুন মাসে দু লাখ টপকে গেলেও বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। ইতিমধ্যে বাংলাদেশিদের সাময়িক ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়াও বন্ধ রেখেছে ভারত সরকার। ফলে পর্যটকের সংখ্যা যে খুব একটা বৃদ্ধি পাবে এমনটা কিন্তু নয়। বরং কমবে।
বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা কমায় ব্যবসায়ীদের অনেকেই ক্ষতির সম্মুখীন। কলকাতার নিউমার্কেট সংলগ্ন বিভিন্ন হোটেলে ভিড় জমান বাংলাদেশিরা। এছাড়াও ভারত বাংলাদেশ বাস সার্ভিস, রেস্তরাঁ, মানি এক্সচেঞ্জার সহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশি পর্যটক নির্ভর। ব্যবসায়ীদের অনেকেই জানিয়েছেন, বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমে যাওয়ার ফলে তাদের ব্যবসার উপর প্রভাব পড়েছে।
এছাড়াও আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে যাঁরা জড়িত, বর্তমানে অশান্ত তাঁদের উপরও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। ভারতীয় এক্সপোর্টার বঙ্কিম প্রধান একটি বাংলা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ভারত ও বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্পর্কের জেরে ভারতে হাজার হাজার পরিবারের অন্ন সংস্থান হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির জেরে ভারতের অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়তে পারে।