ফের রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে ফিরলেন চিকিৎসক অভীক দে এবং বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। RG কর হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর ওই দুই চিকিৎসকের নাম উঠে আসে। অভিযোগ, মেডিক্যাল কলেজে থ্রেট কালচার চালাতেন তাঁরা। এছাড়া, মহিলা চিকিৎসককে যেদিন ধর্ষণ ও খুন করা হয় সেইদিন সেমিনার রুমের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। ওই ভিডিয়োতে অভীক ও বিরূপাক্ষকে দেখা যায়। এরপরই প্রশ্ন ওঠে, RG কর হাসপাতালের চিকিৎসক না হওয়া সত্বেও কেন ওইদিন সেমিনার রুমে উপস্থিত ছিলেন তাঁরা। ৭ সেপ্টেম্বর তাঁদের সাসপেন্ড করে মেডিকেল কাউন্সিল।
RG কর কাণ্ডের আবহে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল জানিয়েছিল, অভীক এবং বিরূপাক্ষ কোনও বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। কিন্তু সোমবার সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। কাউন্সিলের তরফে জানানো হয়, আইনি ভিত্তিতে ওই দুই চিকিৎসককে বাদ দেওয়া হয়নি। এমনকি, কাউন্সিলের আইনেও বহিস্কারের কোনও নিয়ম নেই। সেই কারণে ফের তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
সোমবার কাউন্সিলে ফিরিয়ে নেওয়ার পর ওইদিনই একটি বৈঠকে যোগ দেন অভীক এবং বিরূপাক্ষ। আর এই ঘটনার পর কড়া নিন্দা করেছে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস। তাদের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তাহলে কি বাদ দেওয়ার চিঠি ভাঁওতা ছিল? এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে কাউন্সিলের দফতরের সামনে জড়ো হয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা। বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করেছেন তাঁরা। জানিয়েছেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত আগের সিদ্ধান্ত ফের বলবৎ করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে।
বর্ধমান হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল সাগরদত্ত মেডিক্য়াল কলেজ ও হাসপাতালে। সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতীম প্রধান জানিয়েছেন, সাগরদত্ত হাসপাতালের দুটি ঘর দখল করে থাকতেন বিরূপাক্ষ বিশ্বাস।
কী কী অভিযোগ ছিল বিরূপাক্ষর বিরুদ্ধে?
সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক, কর্মী ও পড়ুয়াদের অভিযোগ মেডিক্যাল কলেজে কোন চিকিৎসক কোন ক্লাস করাবেন, কোন পড়ুয়া হস্টেল পাবেন তা নির্ধারণ করতেন বিরূপাক্ষ। এমনকি ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করেও লাখ লাখ টাকা তুলতেন বলেও অভিযোগ। নম্বর কমানো-বাড়ানোর পিছনেও কাজ করত বিরূপাক্ষর থ্রেট কালচার।
এদিকে পরীক্ষার সময় টুকলি নিয়েও বিরূপাক্ষর নির্দেশ কাজ করত বলেও অভিযোগ। কোন পড়ুয়া টুকলি করলেও ধরা যাবে না, কাকে ধরতে হবে সবকিছুই আগে থেকে ঠিক করে দিতেন বিরূপাক্ষ। তিনি একা নন, একটি চক্রও চালাতেন তিনি। তাঁরা বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে থ্রেট কালচার চালাতেন বলেও অভিযোগ।
একই অভিযোগ ছিল অভীক দে-র বিরুদ্ধেও। একাধিক সরকারি হাসপাতালে থ্রেট কালচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।
RG কর কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয় কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। আর্থিক দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। এরপর বিরূপাক্ষ বিশ্বাস এবং অভীক দে-র নাম উঠে আসে। থ্রেট কালচার চালানো থেকে শুরু করে ক্যান্টিনের বিল না মেটানো সহ একাধিক অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে। এরপর ৫ সেপ্টেম্বর তাঁদের সাসপেন্ড করে স্বাস্থ্য ভবন।