ঐতিহ্যের বালিগঞ্জ (Ballygung) এবার বাবুলের (Babul Supriyo) কাঁধে। বিজেপি (Bjp) ছেড়ে তৃণমূলে (Tmc) যোগ দেওয়ার পর প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শনিবার বালিগঞ্জ কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে (By election) ২০ হাজারের বেশি ভোটে জিতে নেত্রীকে তাঁর আস্থা ফিরিয়ে দিলেন বাবুল। শেষবার এই কেন্দ্র থেকে প্রায় ৭০ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছিলেন প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সেই মার্জিন অবশ্য ছাপিয়ে যেতে পারেননি বাবুল। যা তিনি গণনা শুরুর আগেই স্বীকার করেছিলেন। একইসঙ্গে দাবি করেছিলেন, ৪১ শতাংশ ভোট হয়েছে। তাই তাতে তাঁর ফল আগের মার্জিনকে ছাপিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু বালিগঞ্জ তৃণমূলের হাতছাড়া হতে দিলেন না।
শেষ বিধানসভা ভোটে ঠিক পাশের কেন্দ্র টালিগঞ্জে (Tollygung) বিজেপির প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। ওই কেন্দ্রে তিনি হেরেছিলেন ৫০ হাজারের বেশি ভোটে। রাজনৈতিক মহলের মতে, বাবুল জানতেন তাঁর ভাবমূর্তি নতুন করে পুনরুদ্ধার করতে হলে বালিগঞ্জে তাঁকে দ্বিগুণ পরিশ্রম করতে হবে। আর তাই করেছেন। শেষবেলায় তাঁর হয়ে রোড-শো করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বাকি সময়টা বালিগঞ্জে মাটি কামরে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে বাবুলকে। তাই ভোটের দিন বিজেপি প্রার্থী অত দৌড়ঝাঁপের মধ্যেই বেশ হালকা মেজাজেই দেখা গিয়েছিল বাবুল সুপ্রিয়কে।
বালিগঞ্জ একসময় সিপিএমের দূর্গ ছিল। কিন্তু রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই বালিগঞ্জ মমতার দিকে ঢলে যায়। প্রথমে জাভেদ খান ও পরে প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায় এই কেন্দ্র থেকে বিরোধী ভোটকে তৃণমূলের পালে আনতে সক্ষম হন। এবার পরীক্ষা ছিল বাবুলের। তবে জয়ের দিনেও দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, ৬৪ ও ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডে কেন পিছিয়ে পড়ল তৃণমূল, তা পর্যালোচনা করতে হবে। এই দুটি ওয়ার্ড থেকেই জিতেছেন বামপ্রার্থী। ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
বালিগঞ্জে বাবুলের জয়ের দিনে চমক দিলেন সিপিএম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম। পুরসভা ভোট থেকেই রাজ্যে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বামেরা। বিশেষ করে বিজেপিকে সরিয়ে তারাই উঠে আসছে দ্বিতীয় নম্বরে। সেই ধারাপাতই বজায় থাকল বালিগঞ্জে। বামপ্রার্থী হিসাবে সায়রার নাম ঘোষণা হওয়ার পর অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। কিন্তু শনিবার তাঁর সমালোচকদের জবাব দিলেন বামপ্রার্থী। আর কী হল বিজেপি প্রার্থী কেয়া ঘোষের ? প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়ে বালিগঞ্জে চরকি কেটেছিলেন। বুথ থেকে কলকাতা পুলিশ বার করেছিলেন। কিন্তু ইভিএম খুলতে অন্য ছবি। এরপরে বালিগঞ্জের হারে ভোটারদের দুষলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, আনিশ হত্যা থেকে বগটুই - এই আবহেও রাজ্যের দুটি উপনির্বাচন হয়েছে। তাতেও শাসক তৃণমূলকে কোণঠাসা করতে পারল না বিরোধী, বিশেষ করে বিজেপি। বরং কেন্দ্রের মূল্যবদ্ধিকে পালটা হাতিয়ার করে উপনির্বাচনেও বাজিমাৎ করল তৃণমূল কংগ্রেস।