পঞ্জিকা বলছে আজ একাদশী, আবার কোনও পঞ্জিকা বলছে, আজ দশমী। অধিকাংশ বাড়ির পুজোয় শনিবার প্রতিমা বিসর্জন হলেও বাংলার বেশ কিছু বনেদি পরিবারে মা দুর্গার বিসর্জন, এমন কী সিঁদুর খেলাটাও তুলে রাখা ছিল রবিবারের জন্য।
কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী বড়দেবী বাড়িতে বিদায়বেলায় দুর্গার বরণে মাতলেন বাড়ির মহিলারা। লাল পাড় সাদা শাড়িতে সেজে সিঁদুর খেলায় মাতলেন সবাই। তারপর শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিমাকে নিয়ে যাওয়া হল নিরঞ্জন ঘাটে।
ষষ্ঠীতে বোধন হয়েছিল। তারপর চারটে দিন মা-বাবার কাছে কাটিয়ে গেল উমা, সঙ্গে চার ছেলে মেয়ে। এবার ফেরার পালা। তাই, দশমীর সকাল মানেই সকলের মন খারাপ, এ ওর আড়ালে সকলেরই দু চোখের কোণ মোছা। দশমীর আকাশে রোদ উঠলেও, এই দিন আসলে মেঘলা, কত হাজার বছর ধরেই হয়ে আসছে এমন। নবমীর রাত থেকেই মন ভারী হয়ে আসা, কান্না চেপে দশমীর প্রস্তুতি, মা দুর্গার বরণ, অসুরের মুখেও ভোগ তুলে দেওয়া, এই সব, সব আসলে বাংলার নিজের গল্প, নিজের কথা, বাংলার মানুষের নিজের দিনযাপন, একান্ত আপন এক আবেগ।
প্রতিমা বিসর্জন হলে, ফাঁকা মণ্ডপে, নাটমন্দিরে বুক হুহু করা শূন্যতা নিয়ে টিমটিম করে জ্বলবে একলা প্রদীপ। হেমন্ত আগত, প্রকৃতিও রিক্ত হবে ক্রমশ। উদযাপন শেষে শুরু এক নতুন অপেক্ষা।