বীরভূমের (Birbhum) বগটুই-কাণ্ডের (Bogtui) পর মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন কোণ থেকে অস্ত্র উদ্ধারে তল্লাশি চালাতে। মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশের পর ১০ দিনের জন্য ছুটি বাতিল করে, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায় পুলিশ। উদ্ধার হয়েছিল প্রচুর বোমা (Bomb)-সহ আগ্নেয় অস্ত্র (Ammunition)। হয়তো তাদের চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল খাস কলকাতার (Kolkata) হরিদেবেপুরে (Haridebpur)। যেখানে একটি অটোর (Auto) মধ্যে থেকে উদ্ধার হল ১৯টি তাজা বোমা-সহ কার্তুজ ও অস্ত্র। শনিবার সাতসকালের এই ঘটনায় অবাক পুলিশও। ৪১ ক্লাবের কাছে কী করে একটি অটোর মধ্যে থেকে এত বারুদ পাওয়া গেল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, একটি প্লাস্টিকের ব্যাগের ভিতরে রাখা ছিল বোমাগুলি। সেখানেই বন্দুক এবং কার্তুজের সন্ধান পাওয়া যায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে হরিদেবপুর থানার পুলিশ। বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র এবং কার্তুজ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়। উল্লেখ্য, পরিত্যক্ত ওই অটোটি হরিদেবপুর রুটের নয়। তার পিছনে বিজয়গড় থেকে চক্রবেড়িয়া লেখা ছিল বলে খবর।
আরও পড়ুন : ফের শহরে সিন্ডিকেট রাজ, ব্যবসায়ীকে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাথুরিয়াঘাটায়
যে জায়গগায় এই অটোটি দাঁড়িয়েছিল, তার অদূরেই থাকেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী ৷ কে বা কারা অটোর মধ্যে বোমা বা আগ্নেয়াস্ত্র রেখে গেল, তার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। হরিদেবপুরে একটি ক্লাবের জায়গার মধ্যেই একটি ফিনান্স সংস্থাকে গ্যারেজ ভাড়া দেওয়া ছিল৷ কোনও অটোর কিস্তির টাকা বাকি পড়লে সেই অটোগুলিকে এনে ওই গ্যারেজে রাখা হত৷ ভবানীপুর এলাকার বাসিন্দা এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি অটোকেও দিন কুড়ি আগে ওই ফিনান্স সংস্থার লোকজন নিয়ে এসে ওই গ্যারেজে রেখেছিল ৷ সূত্র মারফত খবর পেয়ে শনিবার ভোর রাতে সেই অটোতেই তল্লাশি চালায় হরিদেবপুর থানার পুলিশ৷ তখনই সেই অটোর ভিতর থেকে উদ্ধার হয় ১৯টি বোমা, একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও দু' রাউন্ড গুলি ৷
দোলের দিনও শহরে গুলি চলার ঘটনা ঘটেছিল। তার পরদিনও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছিল। তারপর থেকে শহরের একাধিক জায়গায় হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বোমাবাজিও রয়েছে। শুরু থেকেই বিষয়টি কলকাতা পুলিশের নজরে রয়েছে। নানা জায়গায় খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেই হরিদেবপুরে পরিত্যক্ত অটোর ভিতরে বোমা উদ্ধারের ঘটনাটি ঘটে। ৪১ পল্লি ক্লাবের সামনের যে রাস্তায় বোমা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে সেটি বেশ সরু এবং বেশ ব্যস্ত। সেই রাস্তায় কীভাবে এই অটো এল? কেনই বা অটোর ভিতরে এতগুলি বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র এবং বুলেট মজুত করে রাখা ছিল? এর নেপথ্যে কোনও বড়সড় নাশকতার ছক ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ। অটোমালিকের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা চলছে। প্রয়োজনে প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। পাশাপাশি ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান বোমাগুলি হয়তো দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তৈরি হয়েছে এবং সেখান থেকেই কলকাতায় আনা হয়েছে। লুকানোর স্থান হিসেবে পরিত্যক্ত অটোকে বেছে নেওয়া হয়েছে।