শনিবার পার্ক স্ট্রিট চত্বরে গুলিচালনার পর কার্যত নির্বিকার অভিযুক্ত জওয়ান অক্ষয়কুমার মিশ্র। হেড কন্সটেবল পদে কর্মরত ওই জওয়ানকে ঘণ্টা দেড়েক অপারেশনের পর গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। জাদুঘর চত্বরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যারাক থেকে বার করে নিয়ে যাওয়ার সময় নির্লিপ্তই দেখাল গ্রেফতার হওয়া ওই জওয়ানকে। পুলিশের গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের দিকে তাকিয়ে হাতও নাড়তে দেখা গেল তাঁকে।
জানা গিয়েছে, দিন তিনেক আগে হামলাকারী জওয়ানের বাবার মৃত্যু হয়েছে। তার জন্য ছুটির আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই আবেদন বাতিল হওয়ায় অক্ষয়ের মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। ছুটির আবেদন মঞ্জুর না হওয়া এবং ডিউডি বণ্টন নিয়ে মৃত রঞ্জিত কুমার সারেঙ্গির সঙ্গে হামলাকারীর মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল বলে সূত্রের খবর। রাতে সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়া হয় হামলাকারীর। রাতে তিনি কিছু খাননি বলেও জানা গিয়েছে। ফলে এর সঙ্গে হামলার ঘটনার যোগ থাকতে পারে বলে প্রাথমিক ধারণা কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরাও।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ভরসন্ধ্যায় আচমকাই গুলি চালাতে শুরু করেন অক্ষয়। এলোপাথাড়ি গুলি পুলিশের গাড়ি এফোঁড় ওফোঁড় করে গিয়েছে। গুলি চলার খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে আসে কলকাতা পুলিশের বিশাল বাহিনী। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, কাঁদানে গ্যাস নিয়ে জাদুঘরের কাছে ওই ব্যারাকের সামনে জড়ো হতে থাকে পুলিশ। আসেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল, যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) মুরলীধর।
প্রথমে মাইকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হামলাকারী অক্ষয়কে। পুলিশ সূত্রে দাবি, উল্টো দিকে অক্ষয়ও পুলিশকে অস্ত্রশস্ত্র বাইরে রেখে ভিতরে ঢোকার আর্জি জানান। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ সময় যায়। এরপর বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করে নিরস্ত্র অবস্থাতেই ভিতরে ঢোকেন কয়েকজন পুলিশ অফিসার। অক্ষয়কে নিরস্ত্র করতে ওখানেই তাঁর ‘কাউন্সেলিং’ করা হয়। এর পর অক্ষয় নিজে থেকেই পুলিশের কাছে ধরা দেন। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে আটক করা হয় এবং পরে গ্রেফতার।