আরজি কর কাণ্ডে অবশেষে সরানো হল কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল ও ডিসি নর্থকে। মঙ্গলবার বিকেল ৪টের পর নতুন পুলিশ কমিশনারের নাম ঘোষণা করা হবে। পুলিশের বেশ কিছু পদে রদবদলও হবে। শুধু পুলিশ নয়, স্বাস্থ্য দফতরেও ব্যাপক রদবদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আরজি কর কাণ্ডের জেরে পুলিশ কমিশনারকে সরানো হলেও সরানো হচ্ছে না স্বাস্থ্য সচিবকে। তার পরিবর্তে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ডিএমই ও ডিএইচএসকেও। জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর সোমবার রাতে একথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, আন্দোলনকারীদের বেশিরভাগ দাবি মেনে নিয়েছে রাজ্য। একই সঙ্গে তাঁদের দ্রুত কাজে ফিরতে ফের অনুরোধ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন জিবি বৈঠকের পরেই জুনিয়র ডাক্তাররাও এই ব্যাপারে সদর্থক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
ঘড়ির কাঁটা ১১টা ৪৬। কালীঘাটের বাসভবনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষ হয় ৮টা ৪৬ মিনিটে। মোট ৫ ঘণ্টা পর শেষ হয় কার্যবিবরণী লেখার কাজ। রাত পৌনে বারোটা নাগাদ বেরোন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। মধ্যরাতে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, "৪২ জন চিকিৎসক মিনিটসে সই করেছেন।আমরা উভয়পক্ষই আলোচনায় খুশি।
সম্প্রতি লালবাজারে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানিয়েছিলেন, তাঁর শীর্ষ কর্তারা যদি পদত্যাগ দাবি করেন, তাহলে তিনি পদত্যাগে রাজি আছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এদিনের বৈঠকে জুনিয়র ডাক্তাররা একথাই তুলে ধরেন। জুনিয়র ডাক্তারদের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা করা হয়।তারপরই সিপিকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের শুনানির পরই মঙ্গলবার বিকেল ৪টের সময় নতুন পুলিশ কমিশনারের নাম ঘোষণা করা হবে। একই সঙ্গে পুলিশেও ব্যাপক রদবদলের ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।
এর আগে নবান্নে আন্দোলনকারী চিকিৎসক ডাকেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। কিন্তু তাঁর মেল অপমানজনক বলে দাবি করেন চিকিৎসকদের একাংশ। নবান্নের বাইরে গিয়েও লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবি জানিয়ে বৈঠকে অংশ নেননি জুনিয়র চিকিৎসকরা। ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর ফিরে যেতে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে।
গত শনিবার ধর্নামঞ্চে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে জানান, তিনি দিদি হিসেবে তাঁদের ধর্নামঞ্চে এসেছেন। আলোচনা করতে তৈরি তিনি। মুখ্যমন্ত্রী ধর্নামঞ্চ থেকে ফেরার পরই মুখ্যসচিব মেল করেন জুনিয়র চিকিৎসকদের। শনিবার কালীঘাটে নিজের বাসভবনে ডাকা হয় বৈঠক। সেই বৈঠকে এসেও লাইভ স্ট্রিমিং-সহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে বৈঠকে অংশ নেননি জুনিয়র চিকিৎসকরা।
সোমবার ফের রাজ্যের পক্ষ থেকে মেইল পাঠানো হয় জুনিয়র ডাক্তারদের। ডাক্তারদের লাইভ স্ট্রিমিংয়ের আবেদন বাতিল করে। ডাক্তাররা পাল্টা ৩ দফা দাবি করে মেইল পাঠান। জানানো হয় কার্যবিবরণীর জন্য ২ জন স্টেনোগ্রাফার যাবেন তাঁদের সঙ্গে। তাতে অনুমতি দেয় রাজ্য। এরপরই কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠক করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগ দাবি করেন। পদত্যাগ দাবি করেন, স্বাস্থ্য আধিকারিকদেরও। মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপিও জমা দেন। রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়,জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক সদর্থক হয়েছে।