গোয়েন্দা প্রধানের পদ থেকে মুরলীধর শর্মাকে সরিয়ে দেওয়ার পরেই এই প্রশ্ন উঠছে। তাঁর বদলে কলকাতা পুলিশের নতুন গোয়েন্দা প্রধান হচ্ছেন প্রণব কুমার। তিনি বারাকপুর পুলিশ অ্যাকেডমিতে ছিলেন। সেখানেই বদলি করা হয়েছে মুরলীধরকে। আরজি করের পর কসবা, সাম্প্রতিক সময়ে এই দুটি ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আরজি করের ঘটনায় পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিনীত গোয়েলকে। আর কসবার ঘটনায় কার্যত কোপ পড়ল মুরলীধর শর্মার উপরেই।
এই পরিস্থিতিতে তাঁর উপর হামলার ঘটনার বিস্তারিত তথ্য এবার মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে চান কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ। মমতার দরবারে যাওয়ার আগে ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সুশান্ত। কথা বলেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে।
গুলশন, কসবায় কাউন্সিলরের উপর হামলার পিছনে উঠে এসেছে এই এলাকার নাম। এই এলাকার বাসিন্দা গুলজার এখন পুলিশের জালে। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় গুলজার জানিয়েছে, বহু বছর ধরেই এই এলাকায় জমি বিবাদ রয়েছে। আর জমির বিবাদে পিছনে রয়েছে কাউন্সিলর ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতাদের দাপট।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, কসবার এই অঞ্চলে দীর্ঘ সময় থেকেই তৃণমূলের অন্তর্কলহ চলছে। মুখে যা স্বীকার করতে নারাজ বাংলার শাসক দল। কলকাতা পুরসভার ১০৭ ও ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে এই অঞ্চল। যেখানে দু হাজার বর্গফুটের একটি জমির সঙ্গেই রয়েছে ১২০ বিঘার একটি ভেড়িও।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় ধরেই এই ভেড়িকে কেন্দ্র করেই বিবাদের সূত্রপাত। আজ থেকে ১০ বছর আগে ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন সুশান্ত। বর্তমানে তিনি ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় ধরেই এই অঞ্চলে বিধায়ক জাভেদ খান গোষ্ঠীর সঙ্গে বিবাদ চলছে সুশান্ত ঘোষের গোষ্ঠীর। আর এই বিবাদকে কাজে লাগিয়ে এলাকায় বেড়েছে প্রোমোদারদের দৌরাত্ম্য।
সুশান্ত ঘনিষ্ঠদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কার্যত নিজের রাজনৈতিক অবস্থানই স্পষ্ট করতে চাইছেন কাউন্সিলর। এমনকী বলতে পারেন কসবা এলাকার রাজনীতির কথাও। ওই বৈঠকে হয়তো বিধায়ক জাভেদ খানের বিরুদ্ধেও কথা উঠতে পারে বলে মনে করছেন কাউন্সিলর ঘনিষ্ঠরা।
গত শুক্রবার ঠিক যে জায়গায় সুশান্ত ঘোষের উপর হামলা হয়েছে, সেটা ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। সেখানেই তাঁর বাড়ি। বর্তমানে ওই এলাকার কাউন্সিলর লিপিকা মান্না। এলাকাবাসী যাঁকে বিধায়ক জাভেদ খানের ঘনিষ্ঠ বলেই জানেন। ঘটনাস্থল থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরেই রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল ঘোষের বাড়ি।
সুশান্তর কথা শুনতে মুখ্যমন্ত্রী যদি অনুমতি দেন, তাহলে কসবা নিয়ে অনেক কথাই উঠতে পারে। কিন্তু কবে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাবেন সুশান্ত ? সেই দিকেই তাকিয়ে কসবার বাসিন্দারা। হয়তো সুশান্ত কথা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দরবার করতে পারেন মেয়র ফিরহাদ হাকিমও।