গোটা কলকাতা শহর এবং শহরতলির একাধিক অংশ জুড়বে মেট্রো রেলের মাধ্যমে। আর সেইমতো পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অতি তৎপরতার সঙ্গে চলছে কাজ। কিন্তু পথ যে খুব একটা মসৃন নয় তা বুঝতে পারছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কারণ একাধিক জায়গায় কাজ সম্পন্ন করতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা শুরু করতে বেশ কয়েক বছর ধরেই কাজ চলছে। সল্টলেক সেক্টর ৫ থেকে শুরু করে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত ওই রুটে মেট্রো চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেইমতো কাজ শুরু হলেও, সমস্যা তৈরি হয় বউবাজার এলাকায়।
ইস্টওয়েস্ট মেট্রোর কাজ ধাপে ধাপে সম্পন্ন হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে সল্টলেক সেক্টর ৫ থেকে শুরু করে শিয়ালদহ পর্যন্ত ৯.৪ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। পরিষেবাও শুরু হয়ে গিয়েছে। তারপর গতবছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত পরিষেবা শুরু চালু হয়েছে। কিন্তু এরপর শিয়ালদহ থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত সংযুক্তিকরণের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয়েছে বউবাজারের ২০০ মিটার অংশের কাজ নিয়ে।
বউবাজারের ২০০ মিটার অংশের কাজ চলছে বর্তমানে। ওই অংশে কাজের সময় টানেলে জল ঢুকতে শুরু করে। দুর্গাপিতুরি লেনের একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। যার জেরে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই বাড়িগুলি খালি করে দেওয়া হয়েছে। কাজ করছেন ইঞ্জিনিয়ররা।
বউবাজারের এলাকার ২০০ মিটারের কাজ সম্পন্ন হলে ১৬.৬ কিলোমিটার রুটের পরিষেবা শুরু করা সম্ভব হবে। কিন্তু কবে থেকে ওই পরিষেবা শুরু হবে? বউবাজার অংশে কর্মরত ইঞ্জিনিয়াররা একটি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, আগামী ১০ মাসের মধ্যে পুরো কাজ শেষ হবে। ফলে মনে করা হচ্ছে আগামী বছর পুজোর আগেই সল্টলেক সেক্টর ৫ থেকে শুরু করে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা শুরু হবে।
কয়েকদিন আগেই মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার পি উদয়কুমার রেড্ডি এই বিষয়ে মুখ খুলেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, বউবাজারের ২০০ মিটার অংশ অত্যন্ত জটিল। সেই কারণে অতি ধীর গতিতে এবং সুরক্ষার মাপকাঠি অনুযায়ী কাজ করতে হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সবার উপরে যাত্রী সুরক্ষা। বউবাজার অংশ অত্যন্ত জটিল। পুরনো বাড়ি রয়েছে সেখানে। সেই কারণে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
বউবাজারের দুর্গাপিতুরি লেনে তৈরি হচ্ছে মেট্রো রেলের ক্রস প্যাসেজ। যার জেরেই মূল সমস্যা। সেইসময় টানেলের ভিতর জল ঢুকে যায়। সেই সময় মেট্রো রেলের ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছিলেন, ক্রস প্যাসেজ তৈরির সময় গ্রাউন্ডিংয়ের কাজ করতে হয়। রেলের কর্মীরা যখন গ্রাউন্ডিং-এর করছিলেন সেই সময়ই জল ঢুকে যায়। আর সেই কারণেই বর্তমানে অতি ধীরে ওই অংশের কাজ করতে হচ্ছে।
বউবাজার অংশের কাজ সম্পন্ন হলে ইস্টওয়েস্ট মেট্রোর নির্মাণ কাজ শেষ হবে। ফলে হাওড়া স্টেশন থেকে সেক্টর ৫ পৌঁছতে কোনও যানজট পোহাতে হবে না। তথ্য প্রযুক্তি তালুকের সঙ্গে হওড়ার যোগাযোগ অত্যন্ত সহজ হবে। এছাড়াও হাওড়া এবং শিয়ালদহের মধ্যেও যোগাযোগ সহজতর হবে।