গার্ডেনরিচ কী পারবে বেলঘরিয়া আর টালিগঞ্জকে ছাপিয়ে যেতে ? সকাল থেকে বিকেল, এখনও পর্যন্ত ১১ কোটি টাকা গুনে উঠতে পেরেছেন ইডি কর্তারা। গেমিং অ্য়াপ তৈরি করে প্রতারণার অভিযোগে বন্দর এলাকার শাহি আস্তাবল গলিতে ব্য়বসায়ী নিসার আহমেদ খানের বাড়িতে শনিবার হানা দিয়েছিল ইডি। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত নিসারের ছেলে আমির খান। এরপর তল্লাশি চালাতে গিয়ে খাটের তলা থেকে উদ্ধার হয় প্লাস্টিক মোড়া ৫০০ ও ২০০০ টাকার নোটের বান্ডিল। জানা গিয়েছে, আটটি টাকা গোনার যন্ত্র আনা হয়েছে। সেইসঙ্গে টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য আনা হয়েছে ১০টি ট্রাঙ্ক। এর আগে স্কুল সার্ভিসে নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় কলকাতার টালিগঞ্জ এবং উত্তর শহরতলির বিটি রোড চত্বর থেকে টাকা উদ্ধার ছবি দেখেছিল এই রাজ্য। এবার তারা সাক্ষী রইল গার্ডেনরিচের ঘটনায়।
এর আগে, কলকাতার বন্দর এলাকার গার্ডেনরিচে ইডির তল্লাশিতে অবশেষে প্রকাশ্য়ে এসেছে মূল অভিযুক্তের নাম। প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ইডি জানিয়েছে, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আমির খান। ই-নাগেট গেমিং অ্যাপ তৈরি করে এতদিন কোটি কোটি টাকা লুঠ করেছে এই ব্যবসায়ীর ছেলে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে পার্ক স্ট্রিট থানা আমিরের বিরুদ্ধে প্রথমে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই শনিবার গার্ডেনরিচের বাড়িতে অভিযান চালায় ইডি। উদ্ধার করে সাত কোটিরও বেশি টাকা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কী এই ই-নাগেট গেমিং ? শুরু হয়েছিল আর পাঁচটা সাধারণ গেমিং অ্যাপের মতই। ওই অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ওয়ালেটে কমিশন হিসেবে টাকা দেওয়া হত। নিজের ইচ্ছামত সময়ে সেই টাকা সহজেই তুলে নিতে পারতেন ব্যবহারকারীরা। ফলে ব্যবহারীদের কারও মনে কোনও সন্দেহও ছিল না। ফলে তাঁরা আরও বেশি বেশি করে টাকা এই গেমিং অ্যাপের জন্য ব্যবহার করতে শুরু করেন। এরপরই সুযোগ বুঝে সব টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়।
ব্যবহারকারীরা ভেবেছিলেন, বড় অঙ্কের টাকা ব্যবহার করা হলে, আরও বেশি টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। আর তাতেই কাল হয়েছে। ব্যবহারকারীরা যখনই কোনও মোটা অঙ্কের টাকা এই অ্যাপে বিনিয়োগ করা হত, তখনই টাকা তোলার অপশনটি বন্ধ করে দেওয়া হত। সিস্টেম আপগ্রেডেশন হচ্ছে বলেই জানানো হত। এরপর সব ব্যবহারকারী আগের প্রোফাইলের যাবতীয় তথ্য উড়ে যায়। ব্যবহারকারীরা তখনই বুঝতে পারেন, তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।