ভেন্টিলেশনে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শনিবার ফুসফুস এবং শ্বাসনালীতে সংক্রমণ নিয়ে তাঁকে আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক ভাবে, সিপ্যাপের সাহায্যে নন-ইনভেনসিভ ভেন্টিলেশনে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু রাত সাড়ে দশটা কিছু পরে ৭৯ বছরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ভেন্টিলেশনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংক্রমণের মাত্রা দেখে চিকিৎসকদের মত, দীর্ঘ সময় তাঁদের তত্ত্বাবধানে থাকতে হতে পারে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে।
গভীর রাতে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, যা যা ওষুধ তাঁকে দেওয়া হয়েছিল তার নিরিখে শারীরিক প্যারামিটার যতটা স্টেবল হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। ফলে পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। রাতেও তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করে মেডিক্যাল বোর্ড। গত দু বছর আগেও এই হাসপাতালেই তাঁকে দু দিনের জন্য ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। এরপর তিনি কোভিড আক্রান্ত হন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কোভিডের জেরে বেড়েছে সিওপিডির প্রকোশ। যার ফলে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ফুসফুসের জোর কমেছে।
গত বুধবার থেকেই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর বালিগঞ্জের পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতেই চলছিল চিকিৎসা। কিন্তু এদিন দুপুরে খাওয়ার পর আচমকা তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পরিবার সূত্রে দাবি, বাড়তে থাকে তাঁর শ্বাসকষ্ট। রক্তে দ্রুত কমতে থাকে অক্সিজেনের মাত্রা। তাই ঝুঁকি না নিয়েই বুদ্ধদেববাবুকে হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশেষ অ্যাম্বুল্যান্সে গ্রিন করিডোর করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসায় ইতিমধ্যেই নয় চিকিৎসকের মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দুটি ফুসফুসেই সংক্রমণ আছে। সংক্রমিত হয়ে তাঁর শ্বাসনালীও। শরীরে মিলেছে ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট ব্যাক্টেরিয়া। হাসপাতাল সূত্রে এর আগে জানানো হয়, খানিকটা আচ্ছন্ন অবস্থায় ছিলেন তিনি। তবে নাম ধরে ডাকলে সাড়া দিচ্ছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অসুস্থতার খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। দেখা করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য এবং সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্যের সঙ্গে। হাজির ছিলেন সিপিএম নেতা রবীন দেব। দেখা করে যান সূর্যকান্ত মিশ্র। রাতে হাসপাতালে ঘুরে যান রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।